অর্ণব দাস, বারাকপুর: বাড়ির পুজোয় পঞ্চমীতে সপরিবারে আগমন হত উমার। সেদিন থেকেই প্রতিবেশী, আত্মীয়দের ভিড় শুরু হতে বাড়িতে। গোটা বাড়ি সাজানো হত আলো দিয়ে। ঢাকের তালে গমগম করত এলাকা। মেয়ে উদ্যোগ নিয়েই সবটা করতেন। কিন্তু গত ৯ই আগস্ট আর জি করে কর্মরত অবস্থায় তাঁর নৃশংস পরিণতিতে আঁধার জমেছে সোদপুর নাটাগড়ের বাড়িতে। তাই ষষ্ঠীর বদলে পঞ্চমীর বিকেলে প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির সামনে ধরনায় বসলেন নির্যাতিতার পরিবার।
ধরনা মঞ্চে বসেই মৃতার মা জানালেন, মেয়ে উদ্যোগ নিয়ে বাড়িতে দুর্গা পুজো করত। বাড়িতে লোক গমগম করত। তাই এদিন থেকে আমরা আর ঘরে থাকতে পারছিনা। মনে অনেক দুঃখ নিয়ে শোকের পুজো করতেই ধরনায় বসেছি। দশমীতে মায়ের নিরঞ্জনের পরেই ঘরে ফিরে যাবো। একই কথা জানিয়েছেন সন্তান হারা বাবা। তাঁর কথায়, “পঞ্চমীর দিন বাড়িতে মাতৃপ্রতিমা আসত। বাড়ির পুজোয় আনন্দ হত। সেই আনন্দ থেকে দূরে থাকার জন্যই আমরা মনের দুঃখেই আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে ধরণায় বসতে বাধ্য হয়েছি। আর কোনদিনও বাড়িতে পুজো হবে না।”
ন্যায় বিচার পাওয়ার আশাও ছাড়েননি তাঁরা। তবে সিবিআইয়ের চার্জশিট প্রসঙ্গে এদিন উত্তর দিতে চাননি মা-বাবা। এ নিয়ে তাদের মন্তব্য, “ধরনা মঞ্চ থেকে এনিয়ে কোনও কথা বলবো না। পুজোর পর যা বলার বলব।” যদিও এদিন ধরনামঞ্চে থেকেই সরব হয়ে মৃতার বাবা বলেন, “আন্দোলন করে সকলে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। কিন্তু সরকারের থোড়াই কেয়ার মনোভাব। প্রশাসন ঠিক চলছে না এটা আমরা ভালোই বুঝতে পারছি। তার ফলের এই অবস্থায় হয়েছে।”
নির্যাতিতার পরিবারের ধরনায় এদিন এসেছিলেন আরজি করের প্রাক্তনী ডাঃ তমোনাশ চৌধুরী সহ পাচ-ছ’জন চিকিৎসক। সন্ধ্যায় এসেছিলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ, কৌস্তভ বাগচী-সহ অন্যান্যরা।