রমেন দাস: ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে খুন হন চিকিৎসক-পড়ুয়া। তারপর একটি মৃত্যু এবং একাধিক প্রশ্নের মধ্যেই বারবার বিতর্ক শাণিয়েছে ওই চিকিৎসকের খুনি কে! বলা ভালো, বিতর্কের অন্দরে ঝড় তুলেছে খুনি ঠিক ক’জন! ঘটনার প্রায় ৫৮দিন পর আদালতে প্রাথমিক চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই (CBI) । দাবি, প্রাথমিক ওই চার্জশিটে খুন-ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে সঞ্জয় রাইকেই (Sanjoy Roy)। এখানেও উঠেছে প্রশ্ন। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সরব হয়েছেন আন্দোলন শুরুর কয়েকটি দাবি নিয়ে। পালটা শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন আর জি কর আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা চিকিৎসক-নেতা সুবর্ণ গোস্বামী (Dr. Subarna Goswami)।
সিবিআইয়ের প্রাথমিক চার্জশিট প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ”কোনও কপি কেউ পায়নি। অনুমানের ভিত্তিতে কোনও খবর নয় না। কিন্তু আর জি করের ঘটনায় (RG Kar Hospital) দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud) সিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখে শিউরে উঠছেন। আমরা সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) বিশ্বাস করছি। অনুমান ভিত্তিক কোনও খবরে প্রতিক্রিয়া দেব না। কিছু লোক এই অনুমানের উপর নির্ভর করে খবর ছড়িয়ে দিচ্ছেন। জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কলকাতা পুলিশকে অকারণ ক্লিনচিট দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা সেটাই বিশ্বাস করছি না।” যদিও ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে সিবিআইয়ের দাখিল করা ওই চার্জশিট। যেখানে খুন-ধর্ষণের মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে রয়েছে সঞ্জয় রাইয়ের নামই! এদিন চার্জশিট নিয়ে ফের সরব হয়েছেন কুণাল ঘোষ। কলকাতা পুলিশের তদন্তের অভিমুখ যে সঠিক, তা নিয়েও সওয়াল করেছেন তৃণমূল নেতা।
এদিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ‘নাগরিক মহামিছিলে’ মিছিলে হাঁটেন চিকিৎসক-তারকারা। ওই মিছিল থেকে সিনিয়র চিকিৎসকদের গণইস্তফা বিতর্ক নিয়েও সরব হন সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি বলেন, ”সরকার তো উল্লসিত হচ্ছে। সরকার চাইছে বেসরকারিকরণ। আমার আপনার ট্যাক্সের টাকায় একটা কার্ড ধরিয়ে দিচ্ছে, যাতে আমি আপনি বেসরকারি হাসপাতালে যাই, সেখানে তাঁরা কোটি কোটি টাকা লাভ করে। সেই সরকার চাইছে বেসরকারিকরণ ঘটাতে। সেই সরকারের কাছে এটা উল্লাসের খবর যে সিনিয়র চিকিৎসকরা নিজেরা ইস্তফার পথে হাঁটছেন। ১০ দিনের ট্রেনিং দিয়ে সিভিক ডাক্তাররা হাসপাতাল চালিয়ে নিতে পারবেন হয়তো! পালটা গণইস্তফা নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ”কার্যত বিনা নোটিসে ইস্তফা দিচ্ছেন। পুজোয় ঘুরতে যাবেন, টিকিট কাটা, তাই নাটক!”
অন্যদিকে উৎসব এবং আন্দোলন বিতর্কেও মুখ খুলেছেন সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর দাবি, ”আমরা পথেই আছি। আমি পুজোর সময় আন্দোলনে থাকব নাকি ম্যাডস্কে বসে গিটার বাজাব, সেটা কি সরকার ঠিক করে দেবে! মানুষের মনে হয়েছে প্রতিবাদের কথা। সবাই নিজের নিজের মতো করে প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন। সরকার তো বলেছিল, উৎসবে ফিরুন।”