অর্ণব আইচ: অজস্র সন্তান তাঁর, সকলেই ভাগ্যতাড়িত, নিপীড়িত, মৃত্যুমুখে পড়া। ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের শিকার তাঁরা। ইহজগতে যে ন্যায় তাঁদের প্রাপ্য ছিল, তা পাননি। তবু লড়াইয়ের তো শেষ নেই। চলে যাওয়া সেসব মেয়েদের জন্য আইনি লড়াই লড়ছেন তিনি। নাম তাঁর সীমা পাহুজা। আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তদন্তকারী অফিসার। সোমবারই এই ঘটনার চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। তা তৈরি হয়েছে সীমা পাহুজাদের হাত ধরে। দায়িত্ব তো প্রায় শেষ, কলকাতায় এবার দুর্গাপুজো দেখবেন? এর জবাবে সীমা বলছেন, ”ঠাকুর তো দেখব, কিন্তু মেয়ের জন্য কান্না পাবে। প্রতি মুহূর্তে মনে পড়বে,ওর সঙ্গে কী কী ঘটেছিল। আমাদের লড়াই এখনও শেষ হয়নি।”
গত ৯ আগস্ট আর জি করের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় পিজিটি তরুণীর মৃতদেহ। প্রথমে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও পরে জানা যায়, এটা ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা। তদন্তে নেমে পুলিশ এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে। পরে সিবিআই এর তদন্তভার নেয়। নিজের কর্মস্থলে এভাবে মৃত্যুমুখে পড়ায় এনিয়ে তোলপাড় হয় গোটা দেশ। নারী নিরাপত্তার বেআব্রু ছবি দেখে শিউরে ওঠে বিশ্ব। বিক্ষোভ শুরু হয় সর্বত্র। এই পরিস্থিতিতে তদন্তে নামে সিবিআই। তদন্তকারী অফিসার হিসেবে সবচেয়ে দক্ষ, অভিজ্ঞ সীমা পাহুজাকে নিয়োগ করা হয়। হাথরাস ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তকারী অফিসার হিসেবে তাঁর কাজের ভিত্তিতে এমন স্পর্শকাতর ঘটনার ভারও তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্ব পাওয়ার ঠিক ৫৮ দিনের মাথায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে একক অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। যা মূলত সীমা পাহুজার হাতে তৈরি। কাজ শেষ, এবার কি কলকাতার পুজো দেখবেন? এ প্রশ্নের জবাবে পঞ্চাশোর্ধ্ব অফিসার বলছেন, ”কাজ করতে গিয়ে ওকে নিজের মেয়ের মতো মনে হয়েছে। ওর জন্য কান্না চেপে ঠাকুর দেখব। বার বার মনে পড়বে, কী কী ঘটেছে মেয়েটার সঙ্গে। ন্যায়বিচার হলে ওর আত্মা শান্তি পাবে, সেটা দ্রুত হোক, তাই চাই।”