দিল্লি এমস না-হোক, হৃষীকেশ এমসের মতো তো পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেন! ঠিক এই ভাবেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। কেন নদিয়ার কল্যাণী এমসে ময়নাতদন্ত করার মতোও পরিকাঠামো নেই, মঙ্গলবার তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তবে শুধু ভর্ৎসনাই নয়, রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে সময়সীমাও দিল উচ্চ আদালত।
জয়নগর-কাণ্ডে নির্যাতিতার দেহের ময়নাতদন্ত কোনও কেন্দ্রীয় হাসপাতালে করতে চেয়েছিল পরিবার। কিন্তু প্রথমে কমান্ড হাসপাতাল তাদের অসুবিধার কথা জানায়। তার পরে কল্যাণী এমস জানিয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন, তা ওই হাসপাতালে নেই। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে নয় বছরের মৃতার ময়নাতদন্ত হয় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। এমসের চিকিৎসকেরাই কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে গিয়ে মৃতের ময়নাতদন্ত করেন। যার প্রাথমিক রিপোর্টে যৌন নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে খুনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কল্যাণী এমসের এই ‘অবস্থা’ কেন? এ নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি ঘোষ। হাই কোর্টের প্রশ্ন, একটা ময়নাতদন্ত করার মতো পরিকাঠামো যেখানে নেই, সেই কেন্দ্রীয় হাসপাতালে মানুষের কী লাভ হচ্ছে? কেন এ রাজ্যের মানুষকে চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারত ছুটে যেতে হয়? কেন্দ্রের আইনজীবীর উদ্দেশে কটাক্ষ করে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘অপারেশন থিয়েটার (কল্যাণী এমসে) আছে তো? না কি সেটাও নেই?’’ বিচারপতি এ-ও বলেন, ‘‘যে হাসপাতালে এমবিবিএস কোর্স করানো হচ্ছে, সেখানকার ডাক্তারি পড়ুয়ারা কোন হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শিখছেন? না কি ময়নাতদন্ত না-শিখেই তাঁরা ডাক্তার হচ্ছেন?’’
হাই কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশে বলেছে, দিল্লি এমস অথবা হৃষীকেশ এমসের মতো পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে কল্যাণী এমসে। আর ওই কাজ শেষ করতে হবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। পরিকাঠামো গড়ার কোনও কাজে যদি রাজ্য সরকারের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, রাজ্য যেন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কল্যাণী এমস সম্পর্কে ভবিষ্যতে যাতে এ রকম আর কোনও অভিযোগ না ওঠে, সে নিয়েও কেন্দ্রকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।