প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন মানিক ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপসের, ওএমআর প্রস্তুত সংস্থার কর্তারও মুক্তি
আনন্দবাজার | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেলেন তাপস মণ্ডল এবং কৌশিক মাজি। এক লক্ষ টাকা করে বন্ডের বিনিময়ে তাঁদের জামিন দিয়েছে বিচারভবন। জামিনের আরও কিছু শর্তও দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন তাপস। মানিক গত মাসেই জামিন পেয়েছেন। কৌশিক হলেন ওএমআর শিট প্রস্তুতকারী সংস্থা এসএন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির কর্তা। জেলমুক্তি ঘটছে তাপস এবং কৌশিক দু’জনেরই।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস এবং কৌশিকের জামিনের জন্য বেশ কিছু শর্ত দিয়েছেন বিচারক। এক লক্ষ টাকা বন্ড ছাড়াও জামিনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে বন্ড দিতে হবে দুই অভিযুক্তের প্রত্যেককে। সিবিআইয়ের তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে। আদালতের শুনানিতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে তাপস এবং কৌশিককে। কোর্ট আরও জানিয়েছে, জামিনের পরেও কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারবেন না দুই অভিযুক্ত। আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারবেন না তাঁরা। পাসপোর্ট থাকলে তা জমা করতে হবে আদালতে। জামিনের শর্তগুলি না মানলে বাতিল করা হবে সেই নির্দেশ বলেও জানিয়ে দিয়েছে আদালত।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন মানিক ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত তাপস। তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত দাবি করেছেন, ৫৯৫ দিন ধরে জেলে রয়েছেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তৃণমূল বিধায়ক মানিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর তাপসের নাম প্রকাশ্যে আসে। সিবিআইয়ের দাবি, শিক্ষা সংস্থার ব্যবসায়ী তাপসের সঙ্গে মানিকের পুত্রেরও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এর পর বহু বার সিবিআই এবং ইডির দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল তাপসকে। তাপস প্রথম থেকেই চাকরিপ্রার্থীদের থেকে বেআইনি ভাবে অর্থ নেওয়ার ঘটনায় নানা তথ্য তদন্তকারীদের দিয়েছিলেন বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের হুগলির যুবনেতা কুন্তল ঘোষকে। তদন্তকারীদের কাছে তাপস দাবি করেছিলেন, তাঁর অফিস থেকে টাকা নিয়ে এজেন্টরা পৌঁছে দিতেন কুন্তলের কাছে। এ বার জেল থেকে বার হতে চলেছেন সেই তাপস।
অন্য দিকে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কৌশিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, এসএন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নিয়োগ প্রক্রিয়ার উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং ওএমআর শিট প্রস্তুত করার দায়িত্বে ছিল। কৌশিক সেই সংস্থারই অন্যতম অংশীদার। অভিযোগ ছিল, তাঁর সংস্থার তৈরি ওএমআর শিটে ফাঁকফোকর ছিল। হার্ড ডিস্ক নষ্টেরও অভিযোগ উঠেছিল। এ বার জামিনে মুক্তি পেলেন কৌশিকও।