বীরভূমের খয়রাশোলে কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে (এনআইএ) দিয়ে তদন্ত করানো হোক। সেই দাবি নিয়ে এ বার কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হল। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের বেঞ্চে মামলা করার অনুমতি চাওয়া হয়। আবেদন শুনে মামলা দায়েরের অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতি। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানির সম্ভাবনা। শুধু এনআইএ তদন্ত নয়, দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
সোমবার সকালে বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানার অন্তর্গত ভাদুলিয়ার গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারিতে (জিএমপিএল) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সোমবারই মৃতের সংখ্যা ছয় ছিল। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় আটে। মৃতদের সকলেরই বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বিস্ফোরণের অভিঘাতে তাঁদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এ দিক ও দিক ছিটকে পড়ে দেহাংশ। আহত হন আরও বেশ কয়েক জন শ্রমিক।
কেন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লাখনিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য একটি ট্রাকে করে বিস্ফোরক আনা হয়েছিল। অভিযোগ, সোমবার যে পরিমাণ বিস্ফোরক আনা হয়েছে একটি ট্রাকে, অন্য সময় তা দু’টি ট্রাকে আনা হয়। তাই ওভারলোডিংয়ের জেরেই এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে অনুমান অনেকের। ঘটনাকে ঘিরে দিনভর উত্তপ্ত ছিল ভাদুলিয়া। উত্তেজনা ছড়ায় কয়লাখনি এলাকা জুড়ে।
সোমবার বিকালে বীরভূমের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) রাণা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ফরেন্সিক দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করবে৷ ওই ঘটনায় মৃতদের পরিবারপিছু একটি করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারকে মোট ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেবে রাজ্য সরকার। সোমবারের বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি সোমবারই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে এই মর্মে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল।