ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুজো উদ্যোক্তাদের সতর্ক থাকতে পুর পরামর্শ
আনন্দবাজার | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
পুজো এসে গেলেও বর্ষা এখনও বিদায় নেয়নি। গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গি এ বার খানিকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুজোর ক’দিন উদ্যোক্তাদের সতর্ক থাকতে বলছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে পুজোর উদ্যোক্তাদের জানানো হয়েছে, মণ্ডপ এবং তার আশপাশে যাতে কোনও ভাবেই জল জমে না থাকে, সে দিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস সোমবার বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি সংক্রমণের হার ৯১ শতাংশ কম। কিন্তু তা বলে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনও কারণ নেই। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব নভেম্বর পর্যন্ত চলার আশঙ্কা প্রবল। এখনও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। পুজোর উদ্যোক্তাদের কাছে আমাদের আবেদন, মণ্ডপ ও তার আশপাশে কোনও ভাবেই জল জমতে দেবেন না।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, অতীতে পুজোর সময়ে শহরের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের বাঁশের উপরের অংশে জল জমায় সেখানে ডেঙ্গির জীবাণুবাহী এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা মিলেছিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে মণ্ডপের বাঁশের উপরে যাতে জল না জমে, তার জন্য উদ্যোক্তাদের বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘নাগরিক সচেতনতাই ডেঙ্গি দূর করতে পারে। ডেঙ্গি নির্মূল করতে সমাজের সব স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। পুজোকর্তাদের কাছে আমাদের আবেদন, জল যাতে না জমে, তা নিশ্চিত করতে ঘন ঘন মণ্ডপ চত্বর পরিদর্শন করুন। মণ্ডপের বাঁশের একেবারে উপরের অংশ যাতে ঢাকা থাকে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।’’
পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ১ অক্টোবর, এই সময়ের মধ্যে শহরে যত জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার তুলনায় চলতি বছরের ওই সময়ে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার ৯১ শতাংশ কম। গত বছর উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণে ডেঙ্গির প্রকোপ অনেক বেশি ছিল। দক্ষিণ কলকাতার আলিপুর, নিউ আলিপুর, গরফা, টালিগঞ্জ, যাদবপুর ও গড়িয়াহাটের মতো এলাকায় লাগামছাড়া হারে ডেঙ্গির সংক্রমণ বেড়েছিল।
পুরসভার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার ডেঙ্গি আক্রান্তের হার অনেকটাই কম। গত বছর দক্ষিণ কলকাতার যে সমস্ত এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছিল, এ বার সেখানেও ডেঙ্গি বিশেষ ছড়ায়নি। তবু, পুজোর ক’টা দিন আমাদের ভাবাচ্ছে। এখন রোজ অল্প হলেও বৃষ্টি হচ্ছে। মণ্ডপের ছাদে পাতা প্লাস্টিকে বৃষ্টির জল জমে বিপদ ডেকে আনতে পারে। জল না সরালে তাতে মশার লার্ভা জন্মাতে পারে। উদ্যোক্তাদের জানিয়েছি, মণ্ডপের উপরের অংশে জল যাতে না জমে, তা নিশ্চিত করতে নজরদারি চালাতে হবে।’’