আজ মহাপঞ্চমী। দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে কলকাতা থেকে জেলা। আর তার মধ্যেই বড় খবর হয়ে গেল। এবার রাজ্য সরকারের উপর আরও চাপ বাড়ানো হল। তবে তাতে কি রাজ্য সরকার চাপে পড়ল? উঠছে প্রশ্ন। কারণ এবার গণইস্তফার পথে হাঁটতে শুরু করলেন একাধিক হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা। আজ, মঙ্গলবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে গণইস্তফা দিলেন প্রায় ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার। এখানেই বিষয়টি থেমে থাকেনি। গণইস্তফার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেডিক্য়াল কলেজ এবং এসএসকেএম হাসপাতালের ডাক্তাররাও। যদিও নবান্ন সূত্রে খবর, গণইস্তফা দিলে পদত্যাগ করা হয় না। তাছাড়া তা পায়নি নবান্ন।
কর্মবিরতি দিয়ে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। তারপর তা উঠেও যায়। আবার সাগর দত্ত হাসপাতালে রোগীর পরিবারের হাতে নিগ্রহ হন চিকিৎসকরা। তখন আর একদফা কর্মবিরতি শুরু হয়। কিন্তু দুর্গাপুজোর মরশুমে তাতে বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি। তারপরই শুরু হল গণইস্তফা। আর এই গণইস্তফা নিয়ে নবান্নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘গণইস্তফা দিলে পদত্যাগ করা হয় না। পৃথক পৃথকভাবে নির্দিষ্ট জায়গায় ইস্তফা দিতে হয়। সেই ইস্তফা যতক্ষণ না পর্যন্ত রাজ্য সরকার গ্রহণ করছে ততক্ষণ তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। যদি সেই ইস্তফা গ্রহণ করা হয়, তাহলে তাঁরা সরকারি সুযোগ–সুবিধা পাবেন না। ভবিষ্যতে সরকারি চাকরিও পাবেন না।’
এই কথা কানে গিয়েছে চিকিৎসকদের। কিন্তু তারপরও তাঁরা পৃথক ইস্তফা দেননি বলেই খবর। সেক্ষেত্রে ওই চিকিৎসকদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গণইস্তফার সঙ্গে আজ জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে প্রতীকী অনশনে বসেন সিনিয়ররা ডাক্তাররা। আর ধর্মতলায় চলছে ‘আমরণ অনশন’। ডাক্তারদের বক্তব্য, ‘প্রত্যেকদিন ১২ ঘণ্টা করে অনশনে বসব। রাতের ডিউটি করে পরের দিন ছুটি পাই। তখনও অনশনে বসব।’ গণইস্তফার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি দেন চিকিৎসকরা। আর নবান্ন জানিয়ে দিয়েছে, ‘চিকিৎসকদের গণইস্তফা নিয়ে কোনও বৈঠক হয়নি। গণইস্তফার কোনও চিঠিও আসেনি।’
রাত পোহালেই মহাষষ্ঠী। ডাক্তাররা সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের ডাক দিয়েছে। ইতিমধ্যেই অনশন ৬০ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকার এখনও সাড়া দেয়নি। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে বেশিরভাগ হাসপাতালে সিসিটিভি বসে যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তাই অনশন না করে কাজে ফিরতে অনুরোধ করেছেন ডাক্তারদের। তারপরও কোনও লাভ হয়নি। এই গণইস্তফা নিয়ে আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক–অধ্যাপক দেবব্রত দাস বলেন, ‘গণইস্তফার মানে আমরা যে কাল থেকেই কাজ বন্ধ করে দিলাম সেটা নয়। কাজ আমরা করব। আমরা হাসপাতাল খালি রেখে যাব না। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের এই গণইস্তফা দেওয়ার অর্থ হল, প্রশাসনের কাছে একটা বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাতে অনশনরতদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।’