• কেশপুরের আকমুড়া গ্রামে প্রথম পুজো, উৎসবের আবহে আত্মহারা গ্রামবাসীরা
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: এক সময় রাজনৈতিক হানাহানি ছিল কেশপুরের দৈনন্দিন কাহিনি। এরফলে বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছিল গ্রামের বাসিন্দাদের। কিন্তু আজ সেসব অতীত। তবে গ্রামে শান্তি ফিরলেও হতো না পুজো। তাই প্রতিবছর পুজোর সময় মন খারাপ থাকত গ্রামের আট থেকে আশি সকলের। এবছর সেই গ্রামের বাসিন্দারা প্রথম শুরু করছেন দুর্গাপুজো। আর তাতেই গোটা গ্রামে যেন উৎসবের ছোঁয়া লেগে গিয়েছে। আনন্দে আত্মহারা তিনটি গ্রামের মানুষ। ছবিটা কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার আকমুড়া গ্রামের। আকমুড়া ছাড়াও সুরতগঞ্জ, আউশবেড়া গ্রামের শতাধিক পরিবার এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পুজোর উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, আগে এই এলাকায় পুজো হতো না। তাই পুজোর চারটে দিন গ্রামবাসীদের মন খারাপ নিয়েই থাকতে হতো। কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে অন্য গ্রামের পুজোয় অংশ নিতে হতো। প্রথম বছরের পুজোয় গ্রামের প্রতিটা মহিলা যুক্ত হয়েছেন। তাঁদের প্রত্যক্ষ সাহায্যে ধুমধাম করে হচ্ছে পুজো। 


    গ্রামের বাসিন্দা লালু পাত্র, রঞ্জিত ভুঁইয়া বলেন, এক সময় এলাকায় রাজনৈতিক অশান্তি লেগে থাকত। সেই সময় পুজোর পরিকল্পনা থাকলেও সম্ভব হয়নি। এখন এলাকায় শান্তি রয়েছে। তাই গ্রামের সকলে মিলে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনও চাঁদা নেওয়া হচ্ছে না। পাড়ার সকলের সাহায্যে পুজো হচ্ছে। 


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের শেষদিক থেকেই কেশপুর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে রাজনৈতিক হানাহানি শুরু হয়। আকমুড়া সহ একাধিক গ্রামে তার প্রভাব ছিল ব্যাপক। ২০১১ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। গত বছর থেকে গ্রামের মানুষ পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। কয়েকমাস আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়। 


    স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রথম বছর তাঁদের পুজোর বাজেট ২ লক্ষ টাকা। মন্দিরের ধাঁচে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। একইসঙ্গে এলাকার শিল্পী কম খরচে তৈরি করছেন সাবেকি ঠাকুর। প্যান্ডেল ও ঠাকুর তৈরি মিলিয়ে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া গ্রামে পুজো উপলক্ষ্যে ছোট মেলাও বসবে। 


    গ্রামবাসী যমুনা দোলই বলেন, বন্যা পরিস্থিতির জেরে চাষের খুব ক্ষতি হয়েছে। তাই খুব সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এই অবস্থায় মহিলারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকার একটা অংশ পুজোর জন্য দেবেন। সবথেকে খুশি এলাকার শিশুরা। তাঁরা সুযোগ পেলেই মণ্ডপে চলে যাচ্ছে। পুজো শুরুর আগেই আমাদের গ্রামে উৎসব লেগে গেছে।  • কেশপুরের আকমুড়া গ্রামে প্রথম পুজো।
  • Link to this news (বর্তমান)