নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: উৎসবকে ‘উৎশব’ বলে কটাক্ষ। মুখ্যমন্ত্রীর উৎসবে ফিরতে বলা কথাকে চ্যালেঞ্জ করে ‘উৎসবে ফিরছি না’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের ঝড়। কখনও তিলোত্তমার বিচার চেয়ে সরাসরি পতাকা হাতে রাস্তায় নেমেছে। কখনও আবার অরাজনৈতিক গণজমায়েতের ডাক দিয়ে পিছনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন ‘কমরেডরা’। শিল্পাঞ্চলবাসী ধরেই নিয়েছিল বামেরা আর দুর্গাপুজোয় ফিরছে না। তাহলে পুজো মণ্ডপের সামনে ‘কমরেডদের’ মতাদর্শ অনুসারি বই বিক্রির কী হবে! অবশেষে জানা গেল, উৎসবে ফিরছি না বলেও ঘটা করে পুজো মণ্ডপের পাশে শারদ স্টল দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তাঁদের লক্ষ্য পশ্চিম বর্ধমান জেলায় কমপক্ষে ৭০টি শারদ স্টল দেওয়া। যেখানে থাকবেন সিপিএমের পার্টি মেম্বারা। যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু বলেন, তাপসী মালিকের হত্যাকাণ্ড বাংলার মানুষ ভুলে যায়নি। আরজি কর কাণ্ডকে হাতিয়ার করে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে বানচাল করে দিতে চেয়েছিল সিপিএম। মানুষ যখন তাঁদের ডাকে সাড়া দেয়নি সেই উৎসবেই আবার নিজেদের বইয়ের স্টল দিচ্ছে। এর থেকে দ্বিচারিতা আর কী হতে পারে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা জেলাজুড়ে ৭০টির বেশি শারদ স্টল করব। কী কী বই রাখা হবে তার তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রানিগঞ্জ, কাঁকসা, আসানসোলে বড় স্টল করা হবে। সেখানেও আমরা তিলোত্তমার বিচার চেয়ে ব্যানার টাঙাব। সেই সংক্রান্ত নানা লেখা তুলে ধরা হবে। কখনও মা দুর্গার চোখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। কখনও আবার মহিলার মুখের অর্ধেকাংশ মা দুর্গার মুখ অন্য অংশে ধর্ষিতার মুক দেখিয়ে ফেসবুকে বিপ্লব চলছে। দুর্গাপুজোর সঙ্গে যে ঘটনার দূরদূরান্তের সম্পর্ক নেই সেই দুর্গাপুজোর সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনাকে জড়িয়ে দিয়ে একের পর এক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে। যার সিংহভাগই বামপন্থী মানসিকতার মানুষজনের। বহু বাম নেতাও একের পর এক এই ধরনের পোস্ট করেছেন। উৎসবের আগে পতাকা নিয়ে, উৎসবের সময়ে গণ জমায়েতের নামে আন্দোলনকে জিইয়ে রাখতে মরিয়া ছিল সিপিএম। গণ জমায়েতে লোকের ভাটা। উল্টো দিকে পুজোর বাজারে মানুষের জনজোয়ার। পরিস্থিতি বুঝেই বামেরা অবস্থান বদল করে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। শাসকদলের দাবি, নীতি আদর্শের কথা বলা বামেদের আসলে কোনও নীতি নেই। তাই যে উৎসব বয়কটের ডাক দিয়েছিল সেই উৎসবেই নিজেদের বই বিক্রি করে কৌটো ভরাতে চাইছে তারা। শেষ মুহূর্তে উৎসবে জনসংযোগ করতে মরিয়া বামেরা। কিন্তু প্রথম থেকেই উৎসবে মানুষের সঙ্গে থেকে জনসংযোগে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বেশিরভাগ পুজো কমিটিই তৃণমূলের বিধায়ক, মন্ত্রী অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে উদ্বোধন করেছেন। শিল্পাঞ্চলে বিজেপির তিন বিধায়ক থাকলেও তাঁদের খুব বেশি দেখা যায়নি।