• তরুণ সঙ্ঘের মাঠে কৃষাণী উৎসব, নবমীতে কুমারী পুজো
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৪
  • সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: তখন দুর্গাপুজো মানেই বিরাট আয়োজন। জোতদার, জমিদার, রাজা, মহারাজাদের পুজো। তাঁরাই পুজো করতেন। প্রজারা পুজোয় শামিল হতেন। প্রসাদ গ্রহণ করতেন। কিন্তু বারোয়ারি পুজোর প্রচলন হতেই সেই ধারা অনেকটা বদলে যায়। আবার গ্রামীণ এলাকায় মা নানা রূপে পূজিত হন। যেমন দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার পর হয় ভাণ্ডানি পুজো। ঠিক তেমনই চারবছর ধরে কোচবিহারের বাণেশ্বর গান্ধী মোড়ে তরুণ সঙ্ঘের মাঠে হয়ে আসছে কৃষাণী উৎসব। এবার এই উৎসব বা পুজোর থিম ‘স্বর্গের দুর্গা’। মায়ের সপরিবার পুজোর পাশাপাশি এখানে দুর্গার নবরূপ ও অষ্টমীতে ছিন্নমস্তা ও দেবী চণ্ডীর আরাধনা করা হয়। নবমীতে কুমারী পুজো হয়। 


    শান্ত গ্রামীণ পরিবেশ। চারপাশে ফাঁকা জায়গা। বাণেশ্বর শিবমন্দির থেকে কিছুটা দূরে এই পুজোর পরিবেশ একেবারেই ঘরোয়া। মহালয়ার দিন ঘট স্থাপন ও প্রতিপদ থেকে পুজো শুরু হয়েছে। কুমারী পুজোর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পুজো। এই পুজো কমিটির সভাপতি পরিমল বর্মন বলেন, মাকে এখানে কৃষাণী রূপে পুজো করা হয়। কৃষকের মা হিসেবে দেবী পূজিতা হন। আমাদের এখানে দুর্গার নবরূপ ও ছিন্নমস্তা কালী চণ্ডী পুজো হয়। কুমারী পুজো হয় নবমীতে। পুজো শুরুর দিন থেকে প্রসাদ বিতরণ করা হচ্ছে। 


    মণ্ডপ, আলোর বিরাট আয়োজন নেই। তবে আছে নিষ্ঠা-ভক্তি সহকারে পুজো। ছিমছাম মণ্ডপে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে দেবী শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিনী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, কাত্যায়নী, স্কন্দমাতা, কালরাত্রী, মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রীর আলাদা আলাদা প্রতিমা। প্রত্যেকে আলাদা রূপ, মহিমা ও বাহন সহ ভিন্ন মাধুর্য নিয়ে এখানে অধিষ্ঠিত। অষ্টমীর দিন আলাদা করে দু’টি প্রতিমায় ছিন্নমস্তা চণ্ডীর পুজো হয়। মন্ত্রোচ্চারণ, ঢাক, কাঁসরের বাদ্যে এলাকা মুখরিত হয়ে উঠছে। ছোট থেকে বড় সকলেই এই পুজোয় শামিল হন।  শহরের বিগ বাজেটের পুজো দেখা শেষে যেকেউ কোচবিহার থেকে ১০-১২ কিমি দূরে বাণেশ্বর শিবমন্দির, শিবদিঘি দর্শনের পাশাপাশি দেখে আসতে পারেন শান্ত পরিবেশের এই গ্রামীণ কৃষাণী উৎসবের দুর্গাপুজো। পুজোর ভিড়ে, ব্যস্ততায় যা কিছুটা অন্যমাত্রা বয়ে আনবে।
  • Link to this news (বর্তমান)