• রোগীমৃত্যু: নার্সকে হেনস্তা, উত্তেজনা
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: চিকিৎসাধীন এক বৃদ্ধার মৃত্যু ঘিরে সোমবার রাত থেকে উত্তেজনা রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।


    অভিযোগ উঠেছে, রোগীর পরিজনরা দুর্ব্যবহার এবং হেনস্তা করেছেন কর্তব্যরত নার্সিং স্টাফ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে। এই ঘটনার পর রাত থেকেই ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন চিকিৎসক, নার্স, জুনিয়র ডাক্তাররা। শেষে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হয় দু’জন। তারপরও মেডিক্যালের নিরাপত্তায় চূড়ান্ত অব্যবস্থার অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এদিন পরিস্থিতি শান্ত করতে রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার, মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি সহ অন্য আধিকারিকরা মেডিক্যালে গেলে তাঁরাও ক্ষোভের মুখে পড়েন। 


    দিনভর দফায় দফায় মেডিক্যাল সুপারের অফিসে জমায়েত হয়ে বেনজিরভাবে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন নার্স, চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসকরা। জমা পড়ে একাধিক লিখিত দাবিদাওয়া। জুনিয়র চিকিৎসকরা রায়গঞ্জ থানার আইসির পদত্যাগ দাবি করেন।


    তাঁদের দাবি, সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিংয়ে দু’জন অস্ত্রধারী কনস্টেবল মোতায়েন করতে হবে। হাসপাতালে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী রাখা যাবে না। 


    ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। মেডিক্যালের ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে মৃত্যু হয় বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভিটিহার কুমারজোলের বাসিন্দা নূরনেহার খাতুনের (৬২)। অভিযোগ, মৃতের পরিজনরা চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তর্কাতর্কি শুরু করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সের সঙ্গে। সেই সময় ফিমেল ওয়ার্ডে রোগীর ১০ থেকে ১৫ জন  পরিজন ঢুকে পড়েন। কর্তব্যরত নার্স ঈশিতা জানা সহ কয়েকজনকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেন তাঁরা। হুমকি দেওয়ার পর তেড়ে গিয়ে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে দাবি হাসপাতালের কর্মীদের। ওয়ার্ডের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়ে রায়গঞ্জ থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।  রাতেই আরিফ সরকার, মহম্মদ কায়ুম নামে দু’জনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর এদিন সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


    ঈশিতা বলেন, রোগীর মৃত্যুর পর পরিজনরা চিত্কার করছিলেন। তাঁদের চুপ করতে বললে আমাদের ঘিরে ঝামেলা শুরু করেন। গালিগালাজ দেওয়া হয় কর্মীদের।


    মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত সুপার বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রবিবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক রোগীকে ফিমেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাঁর সারা শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়েছিল। একসময় তাঁর মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়। ভর্তির সময় ‘হাই রিস্ক কনসেন্ট’ পেপারে সই করেছিল রোগীর পরিবার। সোমবার রাতে রোগীর মৃত্যু হয়। আচমকা ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল ফিমেল ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ে অশান্তি পাকায়। গালিগালাজ করে ওয়ার্ডের নার্সিং স্টাফদের ধাক্কাধাক্কি করে। গেটে পুলিসি প্রহরা, নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকলেও একদল মানুষ চারতলায় কীভাবে উঠে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আমাদের। এই ঘটনায় শুধু চিকিৎসক ও নার্সরা নয়, আমিও আতঙ্কে ভুগছি।
  • Link to this news (বর্তমান)