• জয়নগরে ছাত্রী খুনের তদন্তে গঠিত সিট, আন্দোলনের নাম করে তাণ্ডব, ভাঙা হল পুলিসের গাড়ির কাঁচ
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সংবাদদাতা, বারুইপুর: জয়নগরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর খুনের তদন্তে এবার গঠন করা হল স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এর নেতৃত্বে থাকবেন বারুইপুর পুলিস জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি। পুলিসের তরফে সব রকম উদ্যোগ নেওয়ার পরও জনবিক্ষোভ যেন থামতেই চাইছে না কুলতলির কৃপাখালি, গড়ানকাঠি গ্রামে। মঙ্গলবার পঞ্চমীর সকালে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠল আন্দোলন। এদিন এক অসুস্থ লেডি কনস্টেবলকে পুলিসের গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘিরে ধরে একদল গ্রামবাসী। শুরু হয় বিক্ষোভ। তার মধ্যেই কয়েকজন যুবক ইট নিয়ে গাড়ির দিকে তেড়ে এসে কাঁচ ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। আরেকজন লুকিং গ্লাস উপড়ে ফেলে। আরেকটি দল আবার অনবরত চাপড়াতে থাকে গাড়ির বোনেট। বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হয় পুলিসকে। পরে অন্যত্র ওই পুলিসকর্মীর শুশ্রুষার ব্যবস্থা করা হয়।  হামলার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিস। এই মৃত্যুকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে বিজেপি এবং সিপিএম আসরে নেমে রাজনীতি শুরু করেছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তাদের গাড়ি ভাঙচুরের পিছনেও এই রাজনীতির উস্কানি রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিসের একটি মহল।


    এদিন সকালে ছাত্রীর দেহ নিয়ে প্রথমে কৃপাখালি থেকে গড়ানকাঠি পর্যন্ত মিছিল করেন গ্রামবাসীরা। পরে মহিষমারি যেতে গেলে পুলিস বাধা দেয়।  শববাহী গাড়ি নিয়ে ফিরে আসেন তাঁরা। পরে মৃতের বাড়ির পাশে একটি মন্দিরের কাছে সমাধিস্থ করা হয় ওই নাবালিকাকে। এই পর্বেই  গড়ানকাঠিতে গাছের গুঁড়ি, ইট ফেলে অবরোধ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। যে ধরণের লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবরোধ শুরু হয়, তাতে পিছনে ‘পাকা মাথা’র ইন্ধনটা স্পষ্ট। এই সময় অসুস্থ মহিলা পুলিসকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়িতে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। লেডি কনস্টেবলের ঠিক কী হয়েছে, তা যাচাই করতে চান তাঁরা। খবর পেয়ে গ্রামে ঢুকতে গেলে বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাসকে ঘিরেও শুরু হয় বিক্ষোভ। অবরোধ তুলতে গিয়ে এলাকাবাসীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, হয় অবরোধ তুলে নিন, না হলে যাঁরা গাড়ি ভাঙচুর করেছেন, তাঁদের নাম দিন। বেগতিক বুঝে আন্দোলনকারীরা রাস্তা থেকে ইট-কাঠ সরিয়ে দেন। এরপরই অবরোধ উঠে যায়। তবে রাত পর্যন্ত গ্রামে রাস্তা দখল করে চলে বিক্ষোভ কর্মসূচি। জয়নগরের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল গ্রামে ঢুকতে গেলে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসারী। তবে নির্যাতিতার ছাত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যান সাংসদ।   


    এদিকে, এদিন বারুইপুরের বিশেষ পকসো আদালতে তোলা হয়েছিল ছাত্রী খুনে ধৃত মোস্তাকিন সর্দারকে।  কিন্তু তার হয়ে কেউ দাঁড়াতে রাজি হননি। পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা লিগ্যাল এইড থেকে বিপ্লব রায় মণ্ডল নামে এক আইনজীবীকে নিয়োগ করা হয়। শুনানির শেষে বিচারক ধৃতকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এছাড়া তার মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। এর পাশাপাশি এদিন সকালে খুন হওয়া ছাত্রীর এক বান্ধবীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবর মৃতার বাবার জবানবন্দি নেওয়া হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)