• কারামন্ত্রীকে ফোন করে অনুরোধ কৃষ্ণের, পুজো হবে রায়গঞ্জ সংশোধনাগারে
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৪
  • নির্মাল্য সেনগুপ্ত, রায়গঞ্জ: দু’দিনেই সিদ্ধান্তের আমূল পরিবর্তন। সব বাধা কাটিয়ে শেষপর্যন্ত দুর্গাপুজো হচ্ছে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে। শুরু হয়েছে জোরদার প্রস্তুতি। হাসি ফুটেছে বন্দিদের মুখেও।

    ফান্ডের অভাবে সংশোধনাগারে এবার দুর্গাপুজো হবে না বলে ঠিক ছিল। এ নিয়ে দু’দিন আগে ‘বর্তমান’ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তারপরই নড়েচড়ে বসে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিষয়টি জানতে পেরে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার সঙ্গে কথা বলে সংশোধনাগারে পুজো করার অনুরোধ জানান। এরপরই অনুমোদন মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।

    বহুদিনের পুরনো রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার। এখানে তিনশোর বেশি বন্দি রয়েছেন। কারও বিচার চলছে। কেউ আবার সাজাপ্রাপ্ত। কোনও না কোনওভাবে অপরাধে জড়িয়ে সংশোধনাগারের গরাদই এখন তাঁদের ঠিকানা। তাঁরা সাজা খাটছেন বলে বছরের পর বছর সমাজ থেকে কার্যত দূরে থাকেন। পরিবার, পরিজনদের সঙ্গেও সেভাবে যোগাযোগ হয় না। তাই ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বছরে একবার এই পুজোর অপেক্ষায় থাকেন সংশোধনাগারের প্রত্যেক আবাসিক। ফলে টানাপোড়েনের পর সংশোধনাগারে পুজো হওয়ায় সকলেই খুব খুশি।

    সংশোধনাগারের সুপার নিরঞ্জন সাহা বলেন, শেষপর্যন্ত পুজো হচ্ছে। তার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।

    সংশোধনাগার সূত্রে খবর, সোমবার রাতে এডিজি (কারাদপ্তর) থেকে পুজো করার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত এসেছে। ফান্ডিং করবে কারাদপ্তরই। বিষয়টি চাউর হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন আবাসিকরা। রাতেই তড়িঘড়ি দুর্গা প্রতিমার অর্ডার দেওয়া হয়। বলা হয় পুরোহিতকেও। আলো, মণ্ডপসজ্জার জন্য খবর দেওয়া হয় ডেকরেটারকে। ঠিক হয়েছে মহাষষ্ঠীতে দুর্গাপ্রতিমা আনা হবে সংশোধনাগারে। শুধু তাই নয়, পুজো উপলক্ষ্যে মেনুও নতুন করে ঠিক  করা হয়। স্পেশাল মেনু হচ্ছে একাদশীতে। দুপুরে মুরগির মাংস, ভাত, ডাল, সব্জি। রাতে ডিম, ভাত। এছাড়াও পুজোর কটা দিন মাছ, ভাত এবং পনির, খিচুড়ি, চাটনি থাকবে বন্দিদের মেনুতে।

    বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, সংবাদমাধ্যম থেকে বিষয়টি জানার পরই রাজ্যের কারা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁকে অনুরোধ করি সংশোধনাগারের চিরাচরিত পুজো করার ব্যবস্থা হোক। পুজো না হওয়ার খবরে বন্দিরা মনমরা হয়ে পড়েছিলেন। বছরে এই একটি পুজো ওদের অন্ধকার জীবনে অনেকটা আশার আলো জাগায়। প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকার কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হয়। মন্ত্রীর সহায়তায় পুজো হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। তাঁর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
  • Link to this news (বর্তমান)