• ধসে বিপন্ন পাহাড়ে ভূ-প্রযুক্তি সমীক্ষার দাবি রাজু বিস্তার
    আনন্দবাজার | ০৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ধসে বিপন্ন দার্জিলিঙের একাংশ ঘুরে দেখে দ্রুত ভূ-প্রযুক্তিগত এবং প্রাকৃতিক বিপদ নিয়ে সমীক্ষার দাবি তুললেন এলাকার সাংসদ বিজেপির রাজু বিস্তা।

    প্রশাসন ও বিভিন্ন স্তরে আলোচনা করে ‘জিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’-কে (জিএসআই) দিয়ে সমীক্ষা করানোর কথাও বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দার্জিলিঙের বিজনবাড়ি, রিম্বিক এবং লোধামার মতো একাধিক ধস-বিধ্বস্ত এলাকা দেখার পরে সমীক্ষা প্রয়োজন বলে ঘোষণা করেছেন সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘একাধিক ছোট এবং বড় ধস দেখেছি। কিছু রাস্তা এখনও বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। স্থানীয় বাসিন্দা, যাত্রীদের সমস্যা বাড়ছে। এই অঞ্চলের দ্রুত সমীক্ষার প্রয়োজন। সরকারি স্তরে তা জানানো হয়েছে।’’ সাংসদের আশঙ্কা, এখন ব্যবস্থা না নিলে, ভবিষ্যতে ভয়াবহ কিছু হতে পারে। তাতে প্রাণহানি, পরিকাঠামো এবং সম্পত্তির ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যাবে।

    যদিও প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধসের জেরে বন্ধ রাস্তা খোলার কাজ পাহাড়়ে চলছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে উদ্ধারকাজ হয়েছে। প্রশাসনের তরফে সরকারি ভাবে যা-যা করণীয়, তা করা হবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘সমীক্ষার বিষয়টি কলকাতায় জানানো হয়েছে।’’

    প্রশাসন সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে দার্জিলিঙের বেশ কি‌ছু এলাকা ধসের কবলে পড়়েছে। রিম্বিক থেকে মানেভঞ্জন যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়। কাইজালে বাজার, ঝেপি, লোয়ার লামাগাঁও-সহ একাধিক জায়গায় বহু বাড়ি, কৃষিজমি, মন্দির থেকে রাস্তা নষ্ট হয়েছে। লোধামার শান্তি রোড এলাকার বাসিন্দারা গ্রামের উপরের অংশে বিরাট ফাটল নিয়ে উদ্বিগ্ন। যে কোনও সময় বড় ধসের আশঙ্কা করেছেন গ্রামবাসীরা। বৃষ্টি চলায় উদ্বেগ, আশঙ্কা বাড়ছে এলাকার বাসিন্দাদের। পাহাড়ের বিভিন্ন বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পরে সাংসদের দাবি, কিছু এলাকা ভঙ্গুর এবং বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে, একাংশ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং অর্থনৈতিক সাহায্য করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

    সরকারি সূত্রের খবর, দার্জিলিং শহর লাগোয়া যে এলাকাগুলি ধসের কবলে পড়া শুরু করেছে, তা দার্জিলিঙের ‘খাবারের ঝুড়ি’ বলে পরিচিত। জৈব সারের বহু আনাজ, জোয়ার-বাজরা, ভুট্টা, পাহাড়ের ধাপে ধান চাষ হয়ে থাকে। এই এলাকা ধসের কবলে পড়লে, পাহাড়ে সামাজিক ভারসাম্য নষ্টের সম্ভাবনাও তৈরি হবে। বিশেষ করে, বিজনবাড়ি, গোখ, কাইজালে, ঝেপি, লোধামা, রিম্বিক, শ্রীখোলা, রামন, গোর্খে বা বান্সবোটের মতো এলাকাগুলিতে নজরদারির দাবি উঠেছে। সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘আমি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তালিকা তৈরি করার অনুরোধ করেছি। এতে রাজ্য তো বটেই, কেন্দ্রের কাছেও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ চাইতে সুবিধা হবে।’’ সাংসদের অভিযোগ, ‘‘পরিস্থিতি খারাপ হলেও রাজ্য এখনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’

    যদিও ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর তরফে এক কর্তার দাবি, শুধু রাজ্যের উপরে দায় চাপানো নয়, সাংসদকে বিস্তাকেও ত্রাণ বা সমীক্ষার জন্য তদ্বির শুরু করতে হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)