বেলুড়ের পুজো বাংলার দুর্গোৎসবের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। শতবর্ষ অতিক্রান্ত হওয়ার পরে এই পুজো নিয়ে আমবাঙালির আগ্রহ ঐতিহ্যে আধ্যাত্মিকতায় তা ভরপুর। ১৯০১ সালে বেলুড় মঠে প্রথম দুর্গাপুজো হয়। মঠে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন স্বামী বিবেকানন্দ। স্বামীজি মাতৃত্বের দেবত্ব এবং নারীত্বের পবিত্রতাকে মাতৃপূজার মধ্যে দিয়ে একটা সংহত রূপ দিতে চেয়েছিলেন।
তবে এই পুজোর পিছনে রয়েছে এক অলৌকিক দর্শন। ১৯০১ সালে দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আগে, বেলুড় মঠে দুর্গাপুজো করার স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বয়ং স্বামীজি। আর কমবেশি ঠিক সেই সময়েই, স্বামী ব্রহ্মানন্দজী মহারাজেরও একটি আশ্চর্য দর্শন হয়েছিল। তিনি মা দুর্গাকে দক্ষিণেশ্বর থেকে গঙ্গা পেরিয়ে বেলুড় মঠে আসতে দেখেছিলেন। এটা শুনে স্বামী বিবেকানন্দ ব্রহ্মানন্দজি মহারাজকে অবিলম্বে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন।
তখন হাতে ছিল খুব অল্প সময়। মূল সমস্যা ছিল প্রতিমা পাওয়া। কুমারটুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, একটি জায়গায় দুর্গার একটি মূর্তি আছে, যাঁরা এটির বায়না দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা নিতে আসেননি। সেটিই ওই মৃৎশিল্পী সন্ন্যাসীদের বিক্রি করে দিতে সম্মত হলেন। বাকি সব আয়োজন সমাধা হয়েছিল যথারীতি।
বেলুড় মঠের প্রথম দুর্গাপুজো পুরনো মন্দিরের উত্তরে খোলা মাঠে একটি বিশাল প্যান্ডেলে করা হয়েছিল। পূজারি ছিলেন ব্রহ্মচারী কৃষ্ণলাল এবং তন্ত্রধারক ছিলেন শশী মহারাজের বাবা ঈশ্বরচন্দ্র চক্রবর্তী। বেল গাছের নীচে বসে (এখন যা স্বামীজির মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে) স্বামীজি সেবার আগমনি গান গেয়ে মা দুর্গাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।