নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: উদ্বোধক হিসেবে তো দূর, প্রধান অতিথি হয়েও কোনও পুজো মণ্ডপে বসার জন্য ডাক পেলেন না বিজেপি নেতারা। জেলার অধিকাংশ বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপের উদ্বোধনে ছিলেন শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক খোকন দাস সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা জেলাজুড়ে পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করেন। দুই সাংসদ শর্মিলা সরকার এবং কীর্তি আজাদও জেলার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে হাজির ছিলেন। পুজো উদ্বোধনের পাশাপাশি তাঁরা জনসংযোগও সেরে নেন। কিন্তু সেই সুযোগ বিজেপি নেতাদের হয়নি। গত বছর বিদায়ী সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া সহ গেরুয়া শিবিরের কয়েকজন নেতাকে কয়েকটি পুজো মণ্ডপে দেখা গিয়েছিল। তবে এবার আর তাঁরা ডাক পাননি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বড় পুজো মণ্ডপগুলির সামনে স্টল তৈরির জন্য রাজ্য থেকে নির্দেশ এসেছিল। কিন্তু সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে তাঁরা দু-একটি জায়গা ছাড়া কোথাও স্টল তৈরি করতে পারেনি। বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা শ্যামল রায় বলেন, কীভাবে জনসংযোগ সারতে হয় সেটাই নেতারা জানেন না। পুজো মণ্ডপে গেলে ১০টা লোকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়া যায়। সেই সুযোগও তাঁরা নিতে জানেন না। উদ্বোধক বা বিশেষ অতিথি না হলেও এই কাজ করা যায়। কিন্তু সেই দক্ষতাও বিজেপি নেতাদের নেই।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংগঠনের প্রথম সারির অনেক নেতাই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। আগে যাঁরা পুজো মণ্ডপের সামনে স্টল তৈরি করতেন তাঁরা অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। কেউ কেউ উৎসবের মরশুমে বিরিয়ানির দোকান খুলে বসেছেন। যুবনেতা সুধীর রঞ্জন সাউ বলেন, এভাবে কোনও সংগঠন চলতে পারে না। তাই আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছি। সংগঠন চালাতে হলে মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে। দলে এমন নেতার অভাব রয়েছে। পুজো মণ্ডপে শাসকদলের নেতারা বাড়তি সুযোগ পাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পুজো মণ্ডপে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে বিজেপি নেতাদের কেউই নিষেধ করেনি। সেই যোগাযোগ না থাকার জন্যই তাঁরা মানুষের কাছে যেতে পারছে না। তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, মানুষ বিজেপিকে রিজেক্ট করে দিয়েছে। ওদের নেতারা মণ্ডপে গেলেও কোনও লাভ হবে না। মানুষ ওদের কথা শুনতেই চায় না। বিজেপি নেতা রাজু পাত্র বলেন, পুজো মণ্ডপে আমরা ঘুরছি। মানুষের সঙ্গে কথাও বলছি। কিন্তু এবারের পুজো সম্পূর্ণ অন্যরকম। মানুষ আরজি করের ঘটনা ভুলে যায়নি। সেই কষ্ট বুকে নিয়েই মানুষ পথে নেমেছে।
(আসানসোলে বিশ্ববাংলা সেরার সেরা দুর্গা পুজোর পুরস্কার প্রদান করছেন জেলাশাসক সহ অন্যান্যরা।-নিজস্ব চিত্র)