সংবাদদাতা, কাঁথি: কোথাও থিম গ্রিসের স্থাপত্য। আবার কোথাও মণ্ডপে উঠে এসেছে মহীশূরের প্রাসাদ। মফস্সল এলাকা হলে থিমের বাহার বা বৈচিত্র্যের দিক দিয়ে মোটেই কম যায় না পটাশপুরের পুজো। পুজো উপলক্ষ্যে প্রতিটি ক্লাবই নানা স্বাদের অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির আয়োজন করে। আলোকমালায় সাজিয়ে তোলা হয় উৎসব প্রাঙ্গণ। পটাশপুর-১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে ২৫টির বেশি ছোট-বড় সর্বজনীন পুজো হয়। পটাশপুরের প্রতাপদিঘি সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবার ৭৫ বর্ষে পদার্পণ করল। মঙ্গলবার পুজোর সূচনা করেন তমলুক রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী একরূপানন্দজি। উপস্থিত ছিলেন প্রাবন্ধিক চৈতন্যময় নন্দ, পটাশপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন মাইতি সহ বিশিষ্টরা। দুঃস্থ মহিলাদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়। পটাশপুরের রামকৃষ্ণ সারদা শিক্ষাসদন ও সেবাশ্রমে দুর্গোৎসবের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্টরা।
গ্রিসের একটি প্রাচীন বাড়ির আদলে পটাশপুরের টিকরাপাড়া রবীন্দ্র ইউনাইটেড ক্লাবের পুজোমণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। এই পুজোমণ্ডপের স্থাপত্যের নাম ‘কিয়েন ট্রাক আকিশা’। বাঁশ, ফোম, কাপড়, কাঠ, প্লাই প্রভৃতি দিয়ে ৮০ ফুটের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাবেকি ঘরানার প্রতিমা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি মানস রায়।
পটাশপুরেরই টিকরাপাড়া রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের ২২তম বর্ষের পুজোয় থিম মহীশূরের প্রাসাদ। বাঁশ-কাপড়ের উপর নানা সামগ্রী দিয়ে সুউচ্চ মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়েছে। টিকরাপাড়া অম্বিকাময়ী হাইস্কুলের মাঠে পুজো হয়। ক্লাবের সম্পাদক স্বপন মাইতি বলেন, আলোকসজ্জায় রয়েছে বিশেষ চমক। সাবেকি ঘরানার প্রতিমা থাকছে।
পটাশপুরের টনিয়াভিলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো এবার ৭২ বছরে পা রাখল। এটি এলাকার ১৫টি গ্রামের মধ্যে একমাত্র পুজো। তাই পুজোকে ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে ব্যাপক। বুধবার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পুজোর উদ্বোধন হয়। মঙ্গলবার রাতে এগরার কৌড়দা-বারবাটিয়া মিলনী ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন করেন মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মালিয়া। ছিলেন পটাশপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডা সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। পটাশপুরের নৈপুর শান্তিসুধা ইন্সটিটিউশনে স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরেই পুজো হয়ে আসছে। পুজোয় স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এলাকাবাসীও সমানভাবে অংশগ্রহণ করেন। একটা সময় শুধু স্কুলের উদ্যোগে হলেও বর্তমানে পুজো সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। ইংরেজ আমলে পুজো শুরু হয়েছিল বলে জানালেন এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন শিক্ষক হরিপদ দাসমহাপাত্র। এছাড়া পটাশপুরের দাইতলা বাজার সর্বজনীন, চন্দনপুর ঐকতান জনকল্যাণ সমিতি, পানিয়া-সারদাবাড় সর্বজনীন দুর্গোৎসব, তাপিন্দা মহিলা পরিচালিত পুজো, অমর্ষি সর্বজনীন, চকরসুল বাজার সর্বজনীন সহ এলাকায় আরও বেশকিছু পুজো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
(পটাশপুর টিকরাপাড়া রবীন্দ্রনাথ ইউনাইটেড ক্লাবের গ্রিসের স্থাপত্যের আদলে তৈরি মণ্ডপ।-নিজস্ব চিত্র)