একদা আঁধারে ঢাকা ফুলডাঙার দুর্গাপুজো বোলপুরের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
ইন্দ্রজিৎ রায়, বোলপুর: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শান্তিনিকেতনের ক্যাম্পাসের কাছেই ছিল ছোট্ট একটি গ্রাম ফুলডাঙা। ঠিক যেন প্রদীপের নীচে অন্ধকার। এলাকার অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া। তাঁদের কাছে উৎসব ছিল বিলাসিতার অপর নাম। ফলে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো দেখতে যেতে হতো ভিন পাড়ায়। বিদ্যুৎ না পৌঁছনোয় উৎসবের দিনগুলিতেও ফুলডাঙা ঢেকে থাকত অন্ধকারে। ১৮ বছর আগে এই বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে এলাকার যুবকদের। সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নিল একটি ক্লাব। ফুলডাঙা রাঙামাটি স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটি নাম দেওয়া হল সেই ক্লাবের। সে বছরই ছোট আকারে শুরু হল দুর্গাপুজো। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী অনুদানের ওপর ভর করে এখন এই পুজো বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। গ্রামবাসীকে আনন্দ দিতে পেরে এলাকার যুবক সম্প্রদায়ও খুশি।
বর্তমানে ফুলডাঙা ‘গ্রাম’ তকমা মুছে বোলপুর পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। জনসংখ্যা কম বেশি তিন হাজার। প্রান্তিক বাইপাস লাগোয়া ময়ূরাক্ষী ডিভিশনের সেচ ক্যানালের রাস্তার উল্টোদিকেই এই পুজোমণ্ডপের অবস্থান। ২০০৬ সালে প্রথম দুর্গাপুজো হয়। উপদেষ্টা মণ্ডলীর মধ্যে রয়েছেন নিমাই দাস, অমিত সাউ, অরিজিৎ রায়, গণেশ ঘোষ। বর্তমানে এই পুজো আর ফুলডাঙার মধ্যেই সীমিত নয়। উত্তরপল্লি, সোনাঝুরিপল্লি, প্রান্তিক প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা সক্রিয়ভাবে এই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। ফলে উৎসবের দিনগুলি মণ্ডপ কার্যত চাঁদের হাটে পরিণত হয়। এমনটাই জানালেন ক্লাবের সম্পাদক দিলীপ ছেত্রী। তিনি বলেন, এ বছর আমাদের বাজেট প্রায় তিন লক্ষ টাকা। স্বল্প বাজেটের পুজো হলেও এলাকাবাসীকে উৎসব উপহার দিয়ে তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি, এটাই অনেক আনন্দের। সভাপতি শম্ভুনাথ জ্যোতি বলেন, নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করার পাশাপাশি চারদিন ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে আমাদের পুজোর মূল আকর্ষণ দশমীতে দশেরা উপলক্ষ্যে সেচ ক্যানালে রাবণ দহন। গত বছর অনুষ্ঠানটি এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ার কারণে এবারেও স্থানীয় শিল্পীদের প্রচেষ্টায় রাবণ তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলার চন্দন মণ্ডল বলেন, এত কিছু উৎসব, আনন্দের আয়োজন করতে পারার পিছনে মুখ্যমন্ত্রীর অনুদানের বড় ভূমিকা রয়েছে। তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।