কটা বুড়ির মন্দিরে দেড়শো বছর ধরে হয়ে আসছে শিবদুর্গার পুজো
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বিষ্ণুপুরের গড়দরজায় কটা বুড়ির মন্দিরে দেড়শো বছর ধরে শিবদুর্গার পুজো হয়ে আসছে। পাড়ার তৎকালীন কয়েকজন ব্যক্তি উদ্যোগ নিয়ে টিনের চালাঘরে পুজো শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে যাত্রাপালার টিকিটের আয় থেকে নতুন পাকা মন্দির স্থাপন করা হয়। পুজো উদ্যোক্তারা বলেন, আমাদের মন্দিরে কটা বুড়ি হল মা মনসা। তিনি ভীষণ জাগ্রত। একই মন্দিরে শিবদুর্গার পুজো হয়। এছাড়াও ওই মন্দিরেই কালীপুজো হয়। এবারেও ধুমধাম সহকারে পুজো শুরু হয়েছে। পঞ্চমীর দিন উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলছে।
পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চন্দন মহন্ত বলেন, গড়দরজা ষোলোআনা কমিটির পক্ষ থেকে একই মন্দিরে তিনটি পুজো হয়। তার মধ্যে কটাবুড়ির নিত্যপুজো হয়। এলাকার মোট ১৮০টি পরিবারের চাঁদা থেকে পুজো হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অনুদান পাওয়ায় তা আমাদের খুব কাজে লাগছে।
অপর যুগ্ম সম্পাদক বৈদ্যনাথ গড়াই বলেন, আমাদের কটাবুড়ি ভীষণ জাগ্রত। কেউ মনোস্কামনা করলে তা যেমন পূর্ণ হয়, আবার অবহেলা করলে তাঁর ক্ষতি হয়। তাই মনোস্কামনা পূর্ণ হওয়ায় বহু মানুষ পুজো দিতে আসেন। পাড়ার নবদম্পতিরাও ঘরে ঢোকার আগে কটাবুড়ির মন্দিরে প্রণাম করেন।
সহ সভাপতি স্বপন দত্ত বলেন, প্রায় ১৫০ বছর আগে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি শিবদুর্গার পুজো আরম্ভ করেছিলেন। এবং বহু বছর ধরে টিনের চালাঘরে পুজো হচ্ছিল। তা নিয়ে আমাদের মনে আক্ষেপ ছিল। তাই ১৯৭৮ সালে আমরা কয়েকজন যাত্রাপালার আয়োজন করেছিলাম। তিনদিন ধরে যাত্রা হয়েছিল। প্রচুর ভিড় হওয়ায় দু’দিনেই যাত্রার সমস্ত খরচ উঠে গিয়েছিল। শেষের দিনে প্রায় ১৪ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। ওই টাকা দিয়ে এবং তার সঙ্গে আরও কিছু চাঁদা আদায় করে ১৯৭৯ সালে মায়ের পাকা মন্দির তৈরি করা হয়।
কমিটির যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ বিদ্যুৎ কর ও শ্যামল গোস্বামী বলেন, আমাদের শিবদুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন মনোজ সূত্রধর। পুরোহিত কৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় ও মানস অধিকারী।
বিষ্ণুপুর শহরের পোকাবাঁধ থেকে জয়পুর যাওয়ার পথে গড়দরজায় মেন রাস্তার ধারে কটাবুড়ির মন্দির। ওই মন্দিরেই শিবদুর্গার পুজো হচ্ছে। সাবেকি প্রতিমা হয়েছে। তবে পাড়ার সকলে নিষ্ঠাভরে পুজোয় অংশ নিচ্ছেন। পাশেই সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরি হয়েছে। পঞ্চমীর দিন থেকে সেখানে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। পাড়ার পুরুষ ও মহিলারা পুজোয় অংশ নিয়েছেন। মন্দিরের পাশেই রয়েছে গড়দরজা ফ্রেন্ডস ইউনিট ক্লাব। ষোলোআনা কমিটি ছাড়াও পুজোয় ক্লাবের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সপ্তমী, অষ্টমী নবমী এবং একাদশীর দিন বিশেষ প্রসাদ বিতরণ হয়। -নিজস্ব চিত্র