২০০ জন প্রতিবন্ধী উদ্বোধন করলেন হলদিয়ার দুর্গাচক ব্যবসায়ীবৃন্দ ও কলোনিবাজার দোকানদার সমিতির পুজো
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, হলদিয়া: দু শতাধিক প্রতিবন্ধী একযোগে মঙ্গলদীপ জ্বালিয়ে হলদিয়ার দুর্গাচক ব্যবসায়ীবৃন্দ ও কলোনি বাজার দোকানদার সমিতির পুজোর উদ্বোধন করলেন বুধবার ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। ব্যবসায়ীদের এই পুজো হলদিয়া শহরের আদি পুজোগুলির অন্যতম। এবার ৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে এই পুজো। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান সব ধর্মের ব্যবসায়ীরা মিলিত হয়ে এই পুজোর আয়োজন করে সম্প্রীতির বার্তা দেন। শিল্পশহরে থিমের পুজোর ভিড়ে বাজার সমিতির পুরনো পুজো তার সাবেকি ঐতিহ্য নিয়ে উজ্জ্বল। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে শহরের প্রাণকেন্দ্র দুর্গাচক নিউ মার্কেটের সামনে জাঁকজমক করে হচ্ছে পুজোটি। জন্মাষ্টমীর দিন খুঁটিপুজো থেকে বাজার কমিটির পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। নিউ মার্কেটের সামনে দালানকোঠা বাড়ির আদলে বিশাল মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। মণ্ডপে হাজার খানেক মানুষ বসেই পুজো, আরতি ও পুজোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন। বন্দর শহর গড়ে ওঠার সময়ে সত্তরের দশকের গোড়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মিলিত হয়ে এই পুজো শুরু করেন। হলদিয়া শহরের প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্র দুর্গাচকের কলোনি বাজার এলাকা। আশির দশকে সুপার মার্কেট ও নয়ের দশকে এখানে গড়ে ওঠে নিউ মার্কেট। এই এলাকাতেই শহরের আদি এবং নামী ব্র্যান্ডের বিপণি থেকে বাণিজ্যিক অফিস রয়েছে। দোকানদার সমিতি জানিয়েছে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৭০০ দোকান রয়েছে। কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মাইতি, সহ সভাপতি সত্যশঙ্কর সাহু বলেন, এবার পুজোর বাজেট ২০ লক্ষ টাকা। পুজোয় বাহ্যিক আড়ম্বরের চেয়ে সামাজিক কাজ, মানুষে মানুষে প্রীতির মেলবন্ধনে জোর দেওয়া হয়। পুজো কমিটির উপদেষ্টা থেকে শুরু করে কমিটির বিভিন্ন গুরুদায়িত্ব একসঙ্গে সামলান হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা। পুজো কমিটির সদস্য প্রতাপ মাইতি বলেন, সংস্থার সভাপতি কার্তিকচন্দ্র দাস অধিকারী কয়েক দশক ধরে প্রতিমা দান করে আসছেন। কলোনি বাজারের সাবেকি ধাঁচের দুর্গাপ্রতিমা গড়েন শহরের নামী শিল্পী নন্দলাল জানা। সম্প্রীতির বাতাবরণেই পুজো কমিটির যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন উত্তম দাস অধিকারী ও শেখ সেকেন্দার আলি। এঁরা বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও পুজোয় প্রতিবন্ধী মানুষ ও গরিব মানুষের হাতে পুজোর উপহার তুলে দেওয়া হচ্ছে। অষ্টমীতে কয়েক হাজার মহিলা পুরুষ পুষ্পাঞ্জলি দেন। তাঁদের জন্য লুচি, তরকারি ও ফলের ব্যবস্থা করা হয়। এবছর পুজোর বাজেট কাটছাঁট করে স্বাস্থ্য পরিষেবা, গরিব পড়ুয়াদের জন্য একটি তহবিল গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে বুকলেট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সহ সভাপতি সুকুমার সাহু, হরিপদ দাস বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ১০ হাজার মানুষকে দশমীর দিন খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানো হবে।-নিজস্ব চিত্র