• ইতিহাস ও পর্যটনের মেলবন্ধন ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে, পুজোর চারদিন ঠাসা ভিড়
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: পুজো উপলক্ষে ইতিহাস ও পর্যটনের মেলবন্ধনের সুযোগ ঝাড়গ্ৰাম রাজবাড়িতে। এই রাজবাড়ি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। রাজাদের যুগ আর নেই। তবে মল্লদেব রাজ পরিবারের পরম্পরা ও ঐতিহ্যে আজও চিড় ধরেনি। রাজবাড়ির ‘দ্য প্যালেস ঝাড়গ্ৰাম’ ‘রিসর্টে পর্যটকরা রাজকীয় আতিথ্য ও ঐতিহ্যের স্বাদ একসঙ্গে পাবেন। পুজোয় রাজবাড়ির রাজকীয় থালির সঙ্গে এবার জঙ্গলমহলের বিভিন্ন খাবারের পদ থাকছে।

    রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে ঝাড়গ্ৰাম রাজবাড়ি অনেকদিন আগেই জায়গা করে নিয়েছে। মাল রাজাদের হারিয়ে মানসিংহের বিশ্বস্ত সর্বেশ্বর সিং রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠা করেন। সতেরোতম রাজা নরসিংহ মল্লদেব ১৯৩১ সালে নতুন করে রাজবাড়ি তৈরি করেন। ৭০ বিঘা জমির উপর এই রাজবাড়ি গড়ে উঠেছে। রাজবাড়ির স্থাপত্যে মুঘল ও ইউরোপীয় দুই ঘরানার ছাপ রয়েছে। ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে একসময় লর্ড ওয়েলিংটন, প্রফুল্ল ঘোষ, বিধানচন্দ্র রায়ের মতো বিখ্যাত ব্যাক্তিরা এসেছেন। রাজবাড়ির পাশাপাশি এখানের দুর্গাপুজোও শতাব্দী প্রাচীন। দেবী এখানে পটে পূজিত হন। বোধনের আগেই রাজবাড়ির পুজো শুরু হয়। দশমীতে পাটাবিঁধার বিশেষ অনুষ্ঠান হয়। রাজবাড়ির এই পুজো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসেন । ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে ঝাড়গ্ৰাম রাজবাড়ির আকর্ষণ আগেও ছিল। রাজবাড়ির উদ্যোগে ‘দ্য প্যালেস রিসর্ট’ তৈরি হওয়ার পর আকর্ষণ আরও বেড়েছে। রিসর্টে থাকার জন্য অনলাইন বা ফোনে বুকিং করা যায়। রাজবাড়িতে পৌঁছেও বুক করা যায়। এবছর রাজকীয় থালির সঙ্গে জঙ্গলমহলের বিশেষ খাবারের পদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মল্লদেব রাজবাড়ি ইতিহাসের বহু ঘটনার উত্থান-পতনের সাক্ষী। যে ইতিহাসের পরতে পরতে নানা অজানা কাহিনি জড়িয়ে আছে। পর্যটকরা সেই ইতিহাসের টানেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। রাজবাড়ি দর্শনের সঙ্গেই এখন রাজকীয় আথিত্য গ্রহণের সুযোগ মিলছে। রাজবাড়ির সদস্য বিক্রমাদিত্য মল্লদেব বলেন, রিসর্টে যাঁরা বুকিং করেছেন, তাঁদের জন্য রাজকীয় থালির সঙ্গে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন খাবারের পদের আয়োজন করা হয়েছে‌। পর্যটকরা জঙ্গলমহলে মানুষের বৈচিত্র্যময় খাবারের স্বাদ এবার পাবেন। যেসব পর্যটক এখানে আসছেন, তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদেরও বেশকিছু নিয়মাবলী এখানে মেনে চলতে হয়। তার গাইডলাইন থাকছে। উৎসবের এক ভিন্ন স্বাদ এখানে আসা পর্যটকরা পান। ঝাড়গ্ৰাম শহরের বাসিন্দা সৌভিক রায় বলেন, ঝাড়গ্ৰামের ইতিহাসের সঙ্গে মল্লদেব রাজবাড়ি ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ঝাড়গ্ৰামে যাঁরাই বেড়াতে আসেন, রাজবাড়ির টান তাঁরা এড়াতে পারেন না। ইতিহাস ও পর্যটনের মুখ হয়ে উঠেছে ঝাড়গ্ৰাম রাজবাড়ি।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)