• আকাশ পরিষ্কার হতেই বিকেল থেকে জনজোয়ার আলিপুরদুয়ারের রাস্তায়
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • রবীন রায়, আলিপুরদুয়ার: মঙ্গলবার পঞ্চমীতে আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়। বুধবার মহাষষ্ঠীর সকালে জেলায় ফের বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি শুরু হয়। কোনও কোনও পুজো মণ্ডপে পলিথিন  চুঁইয়ে জলে ভিজে যায় কাপড়। মণ্ডপের সামনে জমে জলকাদা। সকলে মনে করেন ষষ্ঠীর আনন্দই বুঝি মাটি! কিন্তু বেলা বাড়তেই   বৃষ্টির দাপট কমে। ২টো নাগাদ বৃষ্টি কমে রোদের দেখা মেলে। ফের যদি আকাশের মুখ ভার হয়, এই ভেবে বিকেল থেকেই জেলা সদরের মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় জমতে শুরু করে। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতে বিগ বাজেটের পুজোগুলি জনজোয়ারে ভাসে। 

    বক্সা ফিডার রোডের দু’পাশে মিলন সংঙ্ঘ, উপলমুখর ক্লাব ও সুতলিপট্টি  সর্বজনীনের মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে বিকেল থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে। এক টুকরো আন্দামানের আদলে তৈরি মিলন সংঙ্ঘের মণ্ডপে সন্ধ্যায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। মণ্ডপে জারোয়াদের জীবনশৈলীও তুলে ধরা হয়েছে। ফলে শহরের লাইফ লাইন এই রাস্তায় বিকেল থেকেই ভিড় সামলাতে হিমশিম অবস্থা পুলিসের। 

    কাছাকাছি হাসপাতাল মোড় ও বাটা মোড় সংলগ্ন দত্তপাড়া স্বামী বিবেকানন্দ ক্লাবে বিভিন্ন গাছের ছাল দিয়ে তৈরি মণ্ডপও ভিড় টানছে দর্শনার্থীদের। পাশেই রয়েছে স্টেশনপাড়া ক্লাবে থাইল্যান্ডের একটি গুম্ফার আদলে তৈরি মণ্ডপ। এখানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কাছাকাছিই রয়েছে শহরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাবাড়ির পুজো। বারোয়ারি অন্যান্য পুজো দেখলেও শহরের মানুষ একদিনের জন্য হলেও একবার দুর্গাবাড়ি যাবেনই মায়ের দর্শনে। মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকে দুর্গাবাড়িতেও ঢল নামে মানুষের। ফলে এই মণ্ডপগুলি যাওয়ার জন্য শহরের মূল পথ কোচবিহার-ফালাকাটা রোডে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে ষষ্ঠীর বিকেলে থেকে। পঞ্চমী থেকেই ভিড় টানছে শামুকতলা রোডের সুভাষপল্লি কালচারাল স্পোর্টিং ক্লাব ও নিউ আলিপুরদুয়ার রোডের লোহারপুল ইউনিটের পুজো মণ্ডপ। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আদলে তৈরি সুভাষপল্লি কালচারাল স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপ দেখে সকলেই প্রশংসা করছেন। 

    জেলা সদরের বাইরে রেল জংশনের কালীবাড়ি যুব সংঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে মহাষষ্ঠী থেকেই জনজোয়ার। এবার এদের পুজোর থিম প্রেমমন্দির। এবছর ডুয়ার্সের সবচেয়ে বড় পুজো মণ্ডপ বলা যায় কালীবাড়ি যুব সংঙ্ঘের মণ্ডপকে। ঠাকুর দেখতে যুব সংঙ্ঘের মণ্ডপে প্রবেশ করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মণ্ডপের ভিতরের অংশ এতটাই প্রশস্ত যে একসঙ্গে শতাধিক মানুষ দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখতে পারে। ফলে এই মণ্ডপকে ঘিরে ষষ্ঠীর বিকেল থেকেই জংশন এলাকার রাস্তা দর্শনার্থীদের দখলে চলে যায়। 

    দুপুর থেকে আকাশ পরিষ্কার থাকলেও রাতে যখনতখন বৃষ্টি নামতে পারে, এই আশঙ্কায় অনেকে বিকেল বিকেল ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েন। কমবেশি সকলের সঙ্গেই ছিল ছাতা, রেনকোট। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিস সুপার অসীম খান বলেন, রাস্তায় ভিড় সামলাতে অতিরিক্ত ফোর্স নামানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)