• দশমীর দিন যাত্রাপুজো সেরেই কৃষিকাজে রাজবংশী সম্প্রদায়
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • উজ্জ্বল রায়, ধূপগুড়ি: দশমীর দিন যাত্রাপুজার মাধ্যমে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ কৃষিকাজের সূচনা করেন। নিজ জমিতে হালযাত্রা ও পুজো সেরে কৃষিকাজের বিভিন্ন যন্ত্রপাতিকে পুজো দেওয়ার রীতিকে রাজবংশী সম্প্রদায়ের যাত্রাপুজো বলা হয়ে থাকে। অনেকে আবার এই পুজো নবমীর দিন সেরে ফেলেন। নবমীর দিন যাত্রাপুজো না বলে মাত্রাপুজো বলা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরবঙ্গ সহ অসমের বিস্তীর্ণ এলাকার রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ যে প্রকৃতির উপাসক ছিলেন, তার প্রমাণ মেলে এই যাত্রাপুজো ও মাত্রাপুজোয়।

    কথিত আছে, দশমীর দিন মাকে বিদায় জানিয়ে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ যাত্রাপুজোর মাধ্যমে মায়ের কাছে জমির ফসল শস্য শ্যামলা হওয়ার আশীর্বাদ নেন। আশীর্বাদ নেওয়ার পরের দিন থেকে কৃষিকাজে মন দেওয়া শুরু করেন। তবে এই নিয়ে বিতর্ক থাকলেও দশমীর পরের দিন থেকে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষজন কৃষিকাজের নতুন বছর শুরু হয় এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অনেক লোকসংস্কৃতির গবেষক। লোকসংস্কৃতির গবেষক ডঃ রতনচন্দ্র রায় বলেন, গ্রামীণ এলাকায় ধান কাটা হয়ে গেলে কৃষিকাজে নতুন বছরের শুরু। আর এই দিক দিয়ে যাত্রাপুজো হল কৃষিকাজে নতুন বছরের সূচনা।‌

    যাত্রাপুজো কীভাবে হয়ে থাকে? প্রথমে জমিতে হালচাষ করা হয় এবং জমিতে পুজো দেওয়া হয়। তারপর পুজোর উপকরণ হিসাবে থাকে পান সুপারি, ঝরা ফুল (শোলা দিয়ে তৈরি), কলাগাছের ঢনা দিয়ে তৈরি চাইলন বাতি, ধান, দূর্বাঘাস, সিঁদুর। বিশেষ করে গোরুর হাল যাঁদের আছে তাঁরা এই হালযাত্রা পুজো করতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়ে হাল ছেড়ে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করেন। লোকসংস্কৃতির গবেষক তথা অধ্যাপক ডঃ দীপককুমার রায় বলেন, যাত্রাপুজো ও মাত্রাপুজো  রাজবংশী সম্প্রদায়ের প্রাচীন রীতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পুজো প্রায় উঠে যাচ্ছে। তবে এর গুরুত্ব রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)