নির্বাচন মিটতেই আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি, ভোজ্য তেলের খুচরো দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ টাকা
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে লোকসভা ভোটের আগে রপ্তানির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে মোদি সরকার। ভোট মিটতেই নিষেধাজ্ঞাগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে বাড়ছে সমস্ত খাদ্যের দাম। রপ্তানি সংক্রান্ত নিষোধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর দাম বেড়েছে চাল ও পেঁয়াজের। সম্প্রতি ভোজ্য তেলের উপর আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে এক ধাক্কায় ২২ শতাংশ। ফলে একমাসের মধ্যে সবধরনের ভোজ্য তেলের খুচরো দাম বেড়েছে কেজিতে ২৫-৩০ টাকা! বিক্রেতারাও বলছেন, একধাক্কায় তেলের দামের এতটা বৃদ্ধি তাঁরা দেখেননি। সাধারণ চালের দাম রাইস মিল স্তরে বেড়েছে কেজিতে ২-৩ টাকা। ৬-৭ টাকার মতো বেড়েছে চালের খুচরো দাম। কিছুদিন আগেও পেঁয়াজ ৫০ টাকায় মিলত, তা এখন ৭০-৮০ টাকা!
লোকসভা ভোটের আগে সাধারণ সাদা (আতপ) চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়। নিষোধাজ্ঞাটি এখন উঠে গিয়েছে। সিদ্ধ চালের উপর রপ্তানি শুল্ক কমিয়ে করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ফলে খোলা বাজারে ধান ও চালের দাম বাড়ছে। আগামী দিনে আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ভোটের কয়েকমাস আগে পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। ভোটের পর দেওয়া হয় নিয়ন্ত্রিত রপ্তানির অনুমতি। সম্প্রতি ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য তুলে দেওয়া হয়েছে এবং অর্ধেক করা হয়েছে রপ্তানি শুল্ক। মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রভাবশালী পেঁয়াজ লবিকে খুশি করতেই এই সিদ্ধান্ত। মত ব্যবসায়ী মহলের।
চাল রপ্তানির উপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় খুশি বাংলার রাইস মিল মালিক ও রপ্তানিকারীরা। তবে মিল মালিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেকের দাবি, এতে চাষিরা ধানের দাম বেশি পাবেন। ইতিমধ্যে সাধারণ মোটা স্বর্ণ ধানের দাম খোলাবাজারে কুইন্টালে ২০০ টাকা বেড়েছে। গোবিন্দভোগে বেড়েছে ৪০০ টাকা। বিদেশে গোবিন্দভোগের চাহিদা বিপুল। সাদা চাল রপ্তানি বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট ধানের দাম পড়ে গিয়েছিল। রপ্তানির অনুমতি পেতে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হয়। রাইস মিল পর্যায়েই মিনিকিট চালের দাম কেজিতে অন্তত ২ টাকার মতো বেড়েছে। খুচরো দাম বেড়েছে আরও বেশি।
এদিকে পুজোর মুখে বিভিন্ন সব্জির দামও চড়া। টোম্যাটোর খুচরো দর কেজি প্রতি ১৩০ টাকা। সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ৩৮ টাকার মতো। তাই খুচরো পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকা নেওয়া অন্যায়। পুজোর জন্য শহরে লরি চলাচলে কড়াকড়ি করা হয়েছে। এজন্য সরবরাহ কমেছে। সব্জির দামবৃদ্ধির এটাও অন্যতম কারণ বলে তাঁর দাবি।