আর জি করে দুর্নীতির টাকা কোথায় বিনিয়োগ করেছেন সন্দীপ, জানতে মরিয়া ইডি
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে আর্থিক দুর্নীতির টাকা কোথায় পাচার হয়েছে, তার খোঁজ চালাচ্ছে ইডি। তবে তাদের দাবি, জেরায় এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের জবাব এড়াচ্ছেন হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁর অন্য দুই সহযোগী আফসার আলি এবং বিপ্লব সিংও তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। তবে সন্দীপ ও তাঁর দুই সহযোগী যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক, তার নথি তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। অংশীদারিত্বের ব্যবসায় তাঁদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে এজেন্সি।
আর জি করে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে ইডি এই তিনজনের আয়কর রিটার্নের নথি বিশ্লেষণ শুরু করেছে। সেখানে তারা দেখছে, সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ আফসারের আয় বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এমনকী, তাঁর স্ত্রী সহ পরিবারের আয় বৃদ্ধি হয়েছে মাত্রাতিরিক্তভাবে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, একজন সাধারণ নিরাপত্তারক্ষী এত টাকা রোজগার করলেন কীভাবে? এর কারণ খুঁজতে আফসারকে দু’দফায় জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তিনি সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান বলে খবর। এরপরই আর জি করে বিভিন্ন কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থার মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। তাঁরা সবাই জানিয়ে যান, টেন্ডার পেতে গেলে প্রথমে তাঁরা আফসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এর জন্য মোটা টাকা কমিশন দিতে হতো তাঁকে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার যাতে কাজ পান, তার জন্য সন্দীপ ঘোষের মাধ্যমে যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিতেন আফসার। এই কমিশন থেকেই তার বিপুল রোজগার হতে শুরু করে। তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, অবৈধভাবে উপার্জিত এই টাকায় নিজের স্ত্রীর নামে ব্যবসা খুলে বসেন আফসার। সন্দীপ ঘোষের স্নেহধন্য হওয়ায় সহজেই আর জি করে কফি শপ চালানোর সুযোগও পেয়ে যান। এছাড়া বেআইনি পার্কিং ও বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্টের অবৈধ কারবার করে সেখান থেকেও ভালো টাকা আয় করেছেন। পাশাপাশি, সন্দীপ ঘোষও এসব কারবার থেকে বেআইনিভাবে রোজগার করেছেন বলে নথি পেয়েছে ইডি। বেআইনিভাবে আসা টাকা সন্দীপ আফসারকে দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করিয়েছেন। পাশাপাশি, আফসার হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে বেনামি সম্পত্তি কিনতে সাহায্য করেছেন বলেও অভিযোগ। জেলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এসব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষও। তিন অভিযুক্তের ব্যাঙ্কিং নথি ঘেঁটে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের হদিশ পেয়েছে ইডি।