• হঠাৎ বৃষ্টি, চটজলদি বাঁচতে ওয়েস্টার্ন পোশাকে ঝোঁক, সপ্তমী-দশমী ফিরছে শাড়ি ও পাঞ্জাবিই
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাশ্চাত্য না এদেশীয়-কোন স্টাইলের পোশাকের পাল্লা ভারী পুজোর ফ্যাশনে? দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট চত্বরে মানুষের মাথার ঢেউ গুনলে চোখে পড়বে পাশ্চাত্যের পাল্লাই ভারী। তবে কি শাড়ি-শালোয়ার-পাঞ্জাবি এখন আর জেন জি’র পছন্দ নয়? প্রশ্নের উত্তর মিলল কিন্তু সোজাসাপ্টা-‘খুবই পছন্দ। কিন্তু বৃষ্টি মাথায় ঠাকুর দেখতে হলে ওয়েস্টার্ন ড্রেসই দরকার।’ পঞ্চমীতে যাঁরা এ কথা বলছেন তাঁদের অবশ্য এটাও বক্তব্য, ‘সপ্তমী থেকে দশমী শাড়ি-শালোয়ার-ঘাঘরা-ধুতি-পাঞ্জাবিতে ফিরছি, লিখে নিন।’

    ষষ্ঠী দুপুরে খাপছাড়া বৃষ্টি। বিকেলে আকাশ পরিষ্কার। একডালিয়া থেকে হিন্দুস্থান ক্লাবের পথে জনাদশেক তরুণীর একটি দল। সবারই পরণে ওয়েস্টার্ন পোশাক। তাঁদের একজন বললেন, ‘ওয়েস্টার্ন আর শাড়ি-সালোয়ারের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। এটা আগে বুঝে নিন। বিষয়টি হল, এই বৃষ্টি-বাদলার মধ্যে জিনস-টপটাই ভালো। শাড়ি পরার ইচ্ছে বৃষ্টি মাটি করে দিচ্ছে।’ রাতে বৃষ্টি হল না। ত্রিধারায় শাড়ি পরা এক তরুণী বললেন, ‘পুজো মানে কিন্তু শাড়িই। জিনস-টপ বা ওয়েস্টার্ন ঠিক মানায় না। বৃষ্টি হোক গে যাক, এই ক’দিন শাড়িই পরব ঠিক করেছি।’ তাঁর সঙ্গী তরুণ ব্যক্তিটি পরছেন কার্গো আর টি শার্ট। বললেন,‘অষ্টমী বৃষ্টি হলেও ধুতি-পাঞ্জাবি। না হলেও ধুতি-পাঞ্জাবি।’  

    একডালিয়ায় বাবা-মার সঙ্গে এসেছে একদল খুদে। সেই দলে তিনটি মেয়ে। তিনজনকেই শাড়ি পরিয়ে দিয়েছেন অভিভাবকরা। এক হাতে ক্যাপ ফাটানোর বন্দুক ধরে এক হাতে শাড়ি সামলে দিব্যি হাঁটছে তারা। এবার নাকি খুবই টায়ার্ড হয়ে পড়েছে। এখন চাই আইসক্রিম। সেটি শেষ করে বেলুন কিনতে হবে। আর খেলনা তির-ধনুক। একজনের বাবা বললেন, ‘এখন ঠান্ডা লাগলে ডাক্তারকাকুদের পাব না মা। আইসক্রিম পুজোর পরে খেও।’ কি বুঝল কে জানে! বাচ্চাগুলি আইশক্রিমের নাম করল না আর। চলে গেল বেলুন কিনতে।

    বাচ্চাদের বায়না যদি আইসক্রিম হয় তাহলে একটু বড় হয়ে গেলেই আবদার, বন্ধুদের সঙ্গে বেরতে দিতে হবে। ঠাকুর দেখতে এসে মায়েদের মধ্যে সেই আবদার নিয়ে আলোচনা চলছে দেশপ্রিয় পার্কে। একজন সখেদে বলেন, ‘এখন আর ছেলে জিজ্ঞেসও করে না রে। স্ট্রেট বলে দিচ্ছে, কাল বন্ধুদের সঙ্গে বেরব।’ এক বান্ধবী বললেন, ‘আমার মেয়েও তাই বলল। বড় হয়ে গিয়েছে। যাক বন্ধুদের সঙ্গেই যাক।’

    সবমিলিয়ে পুজোর টুকরো টুকরো ছবি ছড়িয়ে থাকল ষষ্ঠীর কলকাতায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ জানিয়ে দিল, উত্সব শুরু। সবে শুরু। ওয়েস্টার্ন-এথনিক-শাড়ি-পাঞ্জাবি-আইশক্রিম-ফুচকা-বিরিয়ানি-নতুন জুতোর হাত ধরে সে উৎসব চলবে সপ্তাহজুড়ে। নিরবিচ্ছিন্ন আনন্দে ডুব শহর-গ্রাম-মফস্সলের। দুগ্গা দুগ্গা বলে ঠাকুর দেখতে প্যান্ডেলে।
  • Link to this news (বর্তমান)