বরানগর থেকে খড়দহ, মহাষষ্ঠীর রাতেই জনস্রোতে ভাসল উত্তর শহরতলির মণ্ডপ
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: মহাষষ্ঠীর রাতে জনপ্লাবনে ভাসল উত্তর শহরতলির বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ। দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শনে ক্লান্তিহীন ছিলেন দর্শনার্থীরা। বরানগর, দমদম, বেলঘরিয়া, পানিহাটি, খড়দহ থেকে নিউ বারাকপুর—চিত্রটা সর্বত্র এক। ষষ্ঠীর বিকেল থেকেই বিপুল ভিড়ের দাপটে বি টি রোড ও দমদম রোডে ব্যাপক যানজটে নাজেহাল হতে হয় মানুষকে। প্যান্ডেল হপিংয়ে বেরিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদেরও সমস্যায় পড়তে হয়।
বুধবার বিকেল থেকে বরানগরের মণ্ডপগুলিতে ভিড় উপচে পড়তে শুরু করে। সিঁথির মোড়ে বন্ধুদল ক্লাবের পুজো ও লাগোয়া মেলায় পা ফেলার জায়গা ছিল না। বি টি রোডের উপরেই দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন। লোল্যান্ড পুজো কমিটি ও ন’পাড়া দাদাভাই সঙ্ঘের মণ্ডপ দেখতে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে মানুষকে। তবে মণ্ডপের সাজসজ্জা দেখে তাঁরা প্রত্যেকেই অভিভূত। বলছেন, ‘কষ্ট আর অপেক্ষা সার্থক হল।’
বেলঘরিয়া মানসবাগের মণ্ডপে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পানিহাটির শহিদ কলোনির পুজো সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। ১০৭ ফুট লম্বা দুর্গা দেখতে সকাল থেকেই জনস্রোত এখানে। সন্ধ্যায় চারপাশ আলোয় সেজে উঠতেই সেই জনস্রোত প্লাবনের চেহারা নেয়। নিউ বারাকপুরের বিভিন্ন মণ্ডপে এদিন সন্ধ্যা থেকে একইরকম ভিড় ছিল। খড়দহের কল্যাণনগর সর্বজনীনের পুজো এবার ৭৬ বছরে পা দিয়েছে। তাদের থিম ‘গ্রাম বাংলা’। শহরের বুকে এক টুকরো গ্রাম চাক্ষুষ করতে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানে মণ্ডপ সেজে উঠেছে কুলো, ঝিনুক, শামুক, ধান, বাঁশ সহ নানা সামগ্রী দিয়ে। মণ্ডপের সামনে বিশালাকার মঙ্গলঘট ও ছোট বড় পুতুলের সাজ সবার নজর কাড়ছে। বিশেষ আকর্ষণ অবশ্যই শিল্পী সনাতন রুদ্র পালের তৈরি প্রতিমা। পুজো কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা সায়ন মজুমদার বলেন, ‘আমাদের থিমের প্রশংসা করছেন বহু দর্শনার্থী।’
বরানগর হাসিখুশি ক্লাবের পুজোর বয়স কম হলেও তাঁদের ভাবনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করেছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা কাগজ ও থার্মোকল কেটে প্রায় ১,২০০ নৌকা তৈরি করেছে। সেই নৌকা দিয়ে সেজে উঠেছে এখানকার মণ্ডপ। প্রতিটি নৌকায় নারী সুরক্ষার নানা বার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান পেয়েছে বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি। তার মধ্যে জেলার সেরা পুজোর তালিকায় রয়েছে মানসবাগ সর্বজনীন ও বেলঘরিয়া পথের সাথী পুজো কমিটি। সেরা মণ্ডপের তালিকায় রয়েছে পানিহাটির শহিদ কলোনি সর্বজনীন ও পানশিলা ঠাকুরবাড়ি সর্বজনীন। সরকারি স্বীকৃতি মেলায় উদ্যোক্তাদের মধ্যেও খুশির আমেজ।