ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থার অবনতি। তাঁর শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গিয়েছে। চিকিৎসক সৈকত নিয়োগী জানান, ইতিমধ্যেই জুনিয়র চিকিৎসকের লিভার এবং কিডনিতে ধীরে ধীরে অনশনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলেই খবর। জানা গিয়েছে, ধরনা মঞ্চের কাছে তৈরি রয়েছে দুটি অ্যাম্বুল্যান্স। অনিকেত-সহ অন্যান্য আন্দোলনকারীদের জন্য আর জি কর মেডিক্যালের আইসিইউতেও বিশেষ ব্যবস্থাপনা করে রাখা হয়েছে। এদিকে, হেয়ার স্ট্রিট থানার তরফে চিঠি পাঠিয়ে সাত অনশনকারীকে অনশন প্রত্যাহার করার আর্জি জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি ধর্মতলার ধরনা মঞ্চে যান। অনশনরত চিকিৎসকদের হাতে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, “আপনারা গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় অনশন করছেন। জোর করে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই মঞ্চ বানিয়েছেন। আপনাদের সামনে যে বোর্ড রাখা হয়েছে, তা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, আপনাদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বুধবার আমরা আপনাদের অনুরোধ করেছিলাম, কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সের সাহায্য নিতে। কিন্তু আপনারা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরা রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরকে অনুরোধ করেছি, আপনাদের জন্য এক দল চিকিৎসক মোতায়েন করা হোক। আমাদের অনুরোধ, আপনারা এই জায়গা ছাড়ুন এবং চিকিৎসার সাহায্য গ্রহণ করুন। সমস্ত প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।”
চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে তাঁদের দাবি, প্রশাসন মোটেও তাঁদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত নয়। শুধুমাত্র জায়গা ছেড়ে দিতে বলাই লক্ষ্য ছিল পুলিশের। পুলিশের তরফে ধরনা প্রত্যাহারের আবেদনকে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট নাইট শিফট করেন আর জি করের তরুণী চিকিৎসক। পরদিন সকালে সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার পর থেকেই সুবিচার এবং নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। কর্মবিরতির ডাক দেন তাঁরা। প্রথম দফায় ৪১ দিনের মাথায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় দফায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মবিরতিতে শামিল হন আন্দোলনকারীরা। পরে যদিও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
তবে গত ৫ অক্টোবর রাত থেকে আমরণ অনশনে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। অনশনকারীরা হলেন কলকাতা মেডিক্যালের তনয়া পাঁজা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরা, এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কেপিসি মেডিক্যালের সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, এনআরএস মেডিক্যালের পুলস্ত্য আচার্য, আর জি কর মেডিক্যালের অনিকেত মাহাতো। সাত অনশনকারীর শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে অবনতি হচ্ছে। তাতে উদ্বিগ্ন সিনিয়র চিকিৎসক থেকে পুলিশ সকলেই।