মণ্ডপে সিঁদুরমাখা পদচিহ্ন! সপ্তমীতে হইচই সিউর গ্রামে
প্রতিদিন | ১১ অক্টোবর ২০২৪
ধীমান রায়, কাটোয়া: গভীর রাত পর্যন্ত মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমা সাজানোর কাজ চলছিল। এর পর ক্লাবের সম্পাদক-সহ কয়েকজন সদস্য বাড়ি চলে যান। তার মিনিট কুড়ি পরেই পুজোর প্রস্তুতির জন্য মন্দিরে চলে আসেন আর এক কর্মকর্তা। কিন্তু তিনি মন্দিরে পা রাখতেই কার্যত চক্ষু চড়কগাছ! দেবীপ্রতিমার সামনেই সিঁদুর ঢেলে কেউ যেন দুটি পায়ের ছাপ এঁকে দিয়ে চলে গিয়েছে। মহাসপ্তমীর পুজোর আগেই দেবীপ্রতিমার সামনে ‘দেবীর পায়ের ছাপ’ দেখতে পাওয়ার ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার সিউর গ্রামের ঘটনা। যদিও স্থানীয়দের একাংশের ধারণা গ্রামেরই কেউ গোপনে মন্দিরে এসে এই কাণ্ড সেরে চলে গিয়েছে। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এই ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ হিসাবেই মনে করছেন। তাই ওই সিঁদুরের ছাপ কেউ মুছতে সাহস করেননি। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলকোটের লাখুড়িয়া অঞ্চলের অজয়নদের অদূরেই সিউর গ্রাম। এই গ্রামের লক্ষ্মীনারায়ণ ক্লাবের বারোয়ারি দুর্গাপুজো ৪২ বছর ধরেই চলে আসছে। পুজোয় ততটা আড়ম্বর না থাকলেও নিষ্ঠার সঙ্গেই পুজো চালিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। ক্লাবের পাকা মন্দিরে দুর্গাপুজো হয়। পুজোর সময় মন্দিরের সামনে মণ্ডপ বাঁধা হয়। ক্লাব পুজোর জন্য সরকারি অনুদানও পায়।
আয়োজক ক্লাবের সম্পাদক নবীনচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘মণ্ডপের কাজ, দেবীপ্রতিমা সাজানোর কাজ সম্পূর্ণ করে রাত দুটো নাগাদ আমরা কয়েকজন বাড়ি চলে যাই। বাড়ি গিয়ে স্নান সারি। খুব ভোর থেকেই পুজো শুরুর কথা। তাই আমরা যাওয়ার মিনিট কুড়ি পরেই আমার দাদা ভোলানাথ মণ্ডল মন্দিরে এসে ওই পায়ের ছাপ দেখতে পান। এর পর তিনি আমাদের ডাকেন।’’ নবীনবাবুর দাদা ভোলানাথ মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমি মন্দিরে ঢুকেই দেখি মায়ের সামনে দুটি পায়ের ছাপ। যেন কেউ এঁকে দিয়ে চলে গিয়েছে। আমি দেখে প্রথমে কিছুটা ভয় পেয়ে যাই। তার পর পাড়ার লোকজন ডাকি।’’
জানা গিয়েছে, এই ঘটনা জানাজানি হতে অনেকেই ওই পায়ের ছাপ দেখতে মন্দিরে ভিড় জমান। যথারীতি পুজোয় বসার সময় ঘনিয়ে আসে। পুরোহিতরা পুজোয় বসেন। কিন্তু সিঁদুর ঢেলে আঁকা পায়ের ছাপ অক্ষত রেখেই পুজো চলতে থাকে। ক্লাব সম্পাদকের কথায়, ‘‘যদিও বিষয়টি নিয়ে আমাদের মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। কিন্তু অনেকেই বিশেষ করে গ্রামের বয়স্করা বিষয়টি খুব বিশ্বাসের সঙ্গেই দেখছেন। আমরা কারও বিশ্বাসে আঘাত করতে চাই না। তাই ওই ছাপ মোছা হয়নি।’’
ক্লাব সূত্রে খবর, লক্ষ্মীনারায়ণ ক্লাবের এবারে প্রায় ৯০ হাজার টাকা পুজোর বাজেট। পুজো ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিমা নিরঞ্জনের দিন খিচুড়ি ভোগেরও ব্যবস্থা করা হয়।