এই সময়: বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কাজে — এই পরিকল্পনাকে থিমে ফুটিয়ে তুলে এক পুজো কমিটি কার্যত তাক লাগিয়েছে দর্শকদের। অন্য একটি মণ্ডপে তৈরি হয়েছে আস্ত এক জঙ্গল। সেখানেই কুটিরে বসবাস এক পরিবারের। পিছনে সভ্যতার শেষ চিহ্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে ভাঙা ইমারত। পুজোর থিম হিসেবে চারদিকেই পরিবেশ নিয়ে এমন সব বার্তা। কিন্তু তার পরেও থাকছে প্রশ্ন। কারণ আয়োজন থেকে প্রসাদ বিতরণ — সর্বত্রই প্লাস্টিকের ছড়াছড়ি।
বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, পুজোতে কি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে পরিবেশ-সচেতনতা? কারণ শুধু প্লাস্টিক বা ফাইবার বা ক্ষতিকর থার্মোকল নয়। শহর থেকে গ্রাম — পুজোয় মাত্রা ছাড়াচ্ছে শব্দদূষণ। পাশাপাশি বা কাছাকাছি একাধিক মণ্ডপে তারস্বরে বাজছে লাউডস্পিকার। প্রশ্ন উঠছে, পুজোর থিম তো জনসমাজে প্রভাব ফেলে, তা হলে উদ্যোক্তারা প্লাস্টিক এবং লাউডস্পিকার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করবেন না কেন?পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘পুজোর সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। যানবাহনের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ে দূষণ। পাশাপাশি ছোট-বড় রেস্তোরাঁ থেকে পাড়ার খাবারের দোকান — সর্বত্রই প্লাস্টিকের ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যায়। কাজেই শুধু থিম তৈরিতে আটকে না থেকে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো ও সে সংক্রান্ত বার্তা দেওয়ার কাজ কেন করবেন না উদ্যোক্তারা?’
আরও এক পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘সরকার পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেয়। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ বাঁচানো, দূষণ নিয়ে সচেতনতার বার্তাকে শর্ত হিসেবে রাখার কথা বলতে পারে প্রশাসন।’ পুজোয় দেদার লাউডস্পিকার ব্যবহারে রাশ টানতে এমনিতে নিয়ম বেঁধে দেয় পুলিশ-প্রশাসন। পুজোর অনুমতির সঙ্গেই বেশ কিছু শর্ত মেনে চলার কথা বলা হয়। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে এর কোনওটাই মানা হয় না। উৎসবে সচেতনতার বার্তা উপেক্ষিতই থেকে যায়।