গোবিন্দ রায়: পুজোমণ্ডপে ‘জাস্টিস’ স্লোগান তোলা ধৃত ৯ জনকে একাধিক শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। একহাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মিলেছে তাঁদের। তবে আর কোনও পুজো মণ্ডপে তাঁরা প্রতিবাদ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। আর শুক্রবার সন্ধেবেলা এই খবর ধর্মতলার অনশন মঞ্চে পৌঁছতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা। কারও কারও চোখে আনন্দাশ্রু। হাই কোর্টের নির্দেশ, জামিনপ্রাপ্তরা আর কোনও পুজোমণ্ডপের ২০০ মিটারের মধ্যে প্রতিবাদ জানাতে পারবেন না। রাজ্য সরকারের কার্নিভালেও কোনওরকম বাধা দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের অবকাশকালীন বেঞ্চ এই জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। তাঁর বক্তব্য, ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই অন্তর্বর্তী জামিন দিল হাই কোর্ট। ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ বহাল থাকবে তাঁদের। তবে বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করেছেন বিচারপতি। ধৃতদের প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দিতে হবে। রাজ্য সরকারের কার্নিভালে কোনওরকম বাধা দেওয়া যাবে না। পুজো মণ্ডপের ২০০ মিটারের মধ্যে কোনও প্রতিবাদ জানানো যাবে না। ওই ধৃতরা আর কোনও পুজো মণ্ডপে প্রতিবাদ জানাতে পারবেন না। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ নভেম্বর।
ঘটনা বুধবারের। দক্ষিণ কলকাতার নামী পুজো ত্রিধারা সম্মিলনীর মণ্ডপে কয়েকজন আন্দোলনকারী ঢুকে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ব্যানার নিয়ে মণ্ডপে ঢুকে স্লোগান দিতে থাকেন। মণ্ডপে লিফলেটও বিলি করা হয়। এর পর পুলিশ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। বৃহস্পতিবার তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। নিম্ন আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ধৃতরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। শুক্রবার অবকাশকালীন বিশেষ বেঞ্চে মামলা শুনবেন বলে জানান বিচারপতি শম্পা সরকার। শুনানিতে তিনি ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন। তাঁর বক্তব্য, এখন অনেকেই এ ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন বিচারের দাবিতে। ধৃতরা কোনও ধর্মীয় উসকানিমূলক স্লোগান দেয়নি। প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের আছে। সবদিক খতিয়ে দেখে তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন বিচারপতি। তবে জামিন দিয়েও একাধিক শর্ত চাপিয়েছে হাই কোর্ট।