ডাক্তারদের ‘মহাসমাবেশ’কে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থন করল রাজ্য বামফ্রন্ট। রাজ্য বামফ্রন্টের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সাধারণ মানুষকে শুক্রবার বিকালে ধর্মতলায় ডাক্তারদের ডাকা সমাবেশে অংশ নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সিপিএম সূত্রে খবর, দলের তরফে ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতা-সংলগ্ন দুই চব্বিশ পরগনা থেকে দলীয় কর্মীরা যেন শুক্রবার ধর্মতলার সমাবেশে যোগ দেন। এ-ও বলা হয়েছে, কোনও রকমের সাংগঠনিক পতাকা নিয়ে যেন কেউ না আসেন। নাগরিক হিসাবেই যেন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
শুক্রবারের মহাসমাবেশে সিপিএমের যোগ দেওয়া নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মুখোশ খুলে গেল। আমরা গোড়া থেকে বলছি যারা পুজোকে নেতিবাচক ভাবে দেখাতে চায়, সেই সিপিএম, নকশাল এবং এসইউসি পুজোর সময়ে অশান্তি পাকাচ্ছে। তদন্ত করছে সিবিআই, তদন্ত হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে, আর এরা এখানে উৎসবকে ভন্ডুল করতে চাইছে!’’ কুণাল আরও বলেন, ‘‘সিপিএম যদি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই মহাসমাবেশকে সমর্থনও করে, তা হলে যেন ওরা সমাবেশের মঞ্চে উঠে ডাক্তার অনিতা দেওয়ান, আর নার্স বর্ণালি দত্তের নামটাও উচ্চারণ করে আসে।’’ এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আমরা শুধু মানুষকে জমায়েতে অংশগ্রহণ করার আবেদন জানিয়েছি। আমরাও যাব। কিন্তু মঞ্চ থেকে দূরে দাঁড়িয়ে দেখব।’’
প্রসঙ্গত, দশ দফা দাবি নিয়ে গত শনিবার রাত থেকে ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন ছয় চিকিৎসক— তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। রবিবার অনশনে যোগ দিয়েছেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোও। বৃহস্পতিবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় অনশনরত অনিকেতকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্নিগ্ধারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। তবু কারও মনোবল এতটুকু কমেনি। বরং শুক্রবার সকালেই আরও জোরালো আন্দোলনের বার্তা দিয়েছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’। জুনিয়র ডাক্তারদের মিলিত মঞ্চের তরফে শুক্রবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে চিকিৎসক দেবাশিস হালদার নাগরিক সমাজকে সংহতির বার্তা নিয়ে আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সেই বৈঠকেই ধর্মতলার অনশনমঞ্চ সংলগ্ন অঞ্চলে শুক্রবার বিকেলে ‘মহাসমাবেশ’-এর ডাক দিয়েছেন তাঁরা। শহরবাসীর উদ্দেশে দেবাশিসের বার্তা, “আমাদের সহযোদ্ধাদের লড়াই ও মানসিক দৃঢ়তার পাশে দাঁড়ান। নবমীর বিকেলে ধর্মতলার মোড়ে এই জমায়েতকে এক ‘মহাসমাবেশ’-এর রূপ দিন।’’ ওই সমাবেশে যোগ দিতে আসা সাধারণ মানুষদের হাতে হাতে লিফলেট তুলে দেবেন তাঁরা। সেখানে উল্লেখ থাকবে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিদাওয়ার কথা।