• নবমীর সন্ধ্যায় সব মণ্ডপের রোশনাইকে ‘ঢেকে দিল’ নিষ্প্রদীপ ধর্মতলা! অনশন মঞ্চে আবেগের ‘ভিন্ন পুজো’
    আনন্দবাজার | ১১ অক্টোবর ২০২৪
  • নবমীর সন্ধ্যা। রাত পেরোলেই দশমী। পুজোর শেষ দিন। পুজোর শেষলগ্নে কলকাতার বিভিন্ন মণ্ডপে সাধারণ মানুষের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। কিন্তু অন্য বারের তুলনায় এ বারের ছবিটা কিছুটা আলাদা। নবমীর সন্ধ্যায় ধর্মতলা চত্বরে এত ভিড় শেষ কবে দেখা গিয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই। ধর্মতলার আশপাশে কোনও পুজো নেই। তাই পুজোর দিনে অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিড় কিছুটা কম থাকে। কিন্তু এ বছর নবমীর সন্ধ্যায় অন্যান্য নামী পুজোমণ্ডপগুলির ভিড়কে ছাপিয়ে গেল ধর্মতলা। জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চের সামনে জনসমুদ্র। সাধারণ মানুষের সেই সমর্থন দেখে আপ্লুত আন্দোলনকারীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘এই সমর্থন আমাদের আন্দোলনকে আরও জোরদার করে তুলেছে। বৃদ্ধি করছে মনোবলও।’’

    শুক্রবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে ধর্মতলায় ‘মহাসমাবেশে’র ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স ফ্রন্ট’, জুনিয়র ডাক্তারদের মিলিত মঞ্চের তরফে শুক্রবার সকালে দেবাশিস হালদার নাগরিক সমাজকে সংহতির বার্তা নিয়ে আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ধর্মতলার অনশনমঞ্চ সংলগ্ন অঞ্চলেই সমাবেশের ডাক দ‌েন তাঁরা। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান ধর্মতলায়। দুপুরের পর থেকেই ধর্মতলার ছবি আস্তে আস্তে পাল্টাতে শুরু করে। মানুষের ঢল নামতে শুরু করে সেখানে। অনশনমঞ্চের সামনের রাস্তা দিয়ে সকালেও গাড়ি চলছিল, কিন্তু দুপুরের পর থেকে তা একে বারে বন্ধ হয়ে যায়। বলা ভাল, মানুষের ভিড়ের কারণে বাধ্য হয়েই ওই লেনে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় কলকাতা পুলিশ।

    সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়েছে ধর্মতলা চত্বরে। অনশন মঞ্চের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা ছিল। তবে তার বাইরে রাস্তা ছিল সাধারণ মানুষের দখলে। তাঁদের মধ্যে কেউ রাস্তায় ছবি আঁকছেন, কেউ স্লোগান দিচ্ছেন, কেউ কেউ আবার জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকের হাতেই পোস্টার। সবকিছুতেই প্রতিবাদের ভাষা। হাজার হাজার কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমণি’ গানও পুজোর আবহে অন্য হাওয়া বইয়েছে। হাজার হাজার মোবাইলের ‘ফ্ল্যাশলাইটে’র আলো ম্লান করে দিয়েছে রাস্তার সব আলোকে। ধর্মতলায় পালিত হল এক ভিন্ন পুজো।

    শুক্রবার সকালে আরও জোরালো আন্দোলনের বার্তা দিয়েছিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স ফ্রন্ট’। জুনিয়র ডাক্তারদের মিলিত মঞ্চের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে দেবাশিস হালদার নাগরিক সমাজকে সংহতির বার্তা নিয়ে আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন। শুক্রবার বিকেলে ধর্মতলার অনশনমঞ্চ সংলগ্ন অঞ্চলেই সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। শহরবাসীর উদ্দেশে দেবাশিসের বার্তা, “আমাদের সহযোদ্ধাদের লড়াই ও মানসিক দৃঢ়তার পাশে দাঁড়ান। নবমীর বিকেলে ধর্মতলার মোড়ে এই জমায়েতকে এক ‘মহাসমাবেশ’-এর রূপ দিন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)