কর্মী ঘাটতির জেরে ব্যাঘাত ঘটছে রক্ষণাবেক্ষণে, পর পর দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে রেল নিতে চায় বেসরকারি সাহায্য
আনন্দবাজার | ১২ অক্টোবর ২০২৪
রেলের সুরক্ষা ক্ষেত্রে কর্মীর বিপুল ঘাটতি রক্ষণাবেক্ষণের নানা কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। পর পর রেল দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বার যন্ত্র-নির্ভর উন্নত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে দিয়ে সমস্যা মোকাবিলা করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর।
কী ভাবে ও কতটা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে করা যায়, তা নিয়ে পরামর্শ চেয়ে রেল বোর্ড ইতিমধ্যেই দেশের সব ক’টি জ়োনকে চিঠি দিয়েছে। রেল সূত্রের খবর, অতীতের তুলনায় ট্রেন চলাচলের চাপ অনেক বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিভিন্ন রেলপথ ‘ব্লক’ (ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা) করে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাওয়া সময়ের পরিমাণ কমছে। কর্মীর অভাব সেই সঙ্কট আরও গভীর করেছে বলে রেল সূত্রের খবর। সমস্যা মেটাতে ইউরোপের বিভিন্ন উন্নত দেশের ধাঁচে যন্ত্র এবং প্রযুক্তি-নির্ভর রক্ষণাবেক্ষণের উপরে জোর দিতে চাইছে রেল। এ ক্ষেত্রে ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণেই সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রেল সূত্রের খবর, বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে যন্ত্র ব্যবহার করে ট্র্যাকের স্বাস্থ্য যাচাই এবং প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে চায় রেল। সে জন্য দেশের সর্বত্র একই ধরনের যন্ত্র, পরীক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণ পরিকাঠামো তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে।
বস্তুত, একের পর এক রেল দুর্ঘটনায় রেলের ট্র্যাক ছাড়াও ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের খামতির অভিযোগ উঠে এসেছে। সরকারি স্তরে সুরক্ষা নিয়ে বহু প্রচার চললেও বাস্তবে দুর্ঘটনা রেলের পিছু ছাড়েনি।
এরই পাশাপাশি, রেলের পক্ষ থেকে লোকো পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে ট্রেন সিমুলেটর কিনছে রেল। বেলজিয়াম, ইতালি, ফ্রান্সের মতো বিভিন্ন দেশের একাধিক সংস্থার কাছ থেকে ১৭টি এমন যন্ত্র কেনা হচ্ছে। যা চালকদের উন্নত প্রশিক্ষণে সাহায্য করবে। এই প্রসঙ্গে এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণ সামলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজের সময় কমছে। এ দিকে কর্মী সংখ্যাও কমছে। ফলে, উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্র-নির্ভর রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া রেলের এত বিপুল পরিসর সামাল দেওয়া মুশকিল।’’