বন্ধ চা–বাগানগুলিও মেতে উঠল দুর্গাপুজোয়, রাজ্যের অনুদানে উৎসবে ফেরেন শ্রমিকরা
হিন্দুস্তান টাইমস | ১২ অক্টোবর ২০২৪
দুর্গাপুজোর সময় চা–বাগানের শ্রমিকদের বোনাস নিয়ে একটা জটিলতা দেখা দিয়ে ছিল। আর সেই জটিলতা কাটিয়ে রাজ্য সরকার চা–বাগানগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসে চা–শ্রমিকদের বোনাসের ব্যবস্থা করেন। তাতে মুখে হাসি ফোটে চা–শ্রমিকদের। তবে এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো করার জন্য যে অনুদান দেন তাতে এবার হাসি ফুটল বন্ধ চা–বাগান শ্রমিকদের মুখে। সুতরাং তাঁরাও মেতে উঠলেন দুর্গাপুজোয়। নানা প্রতিকূলতার পরেও রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গাপুজো অনুদানের ৮৫ হাজার টাকায় জেলার প্রত্যেকটি বন্ধ চা–বাগানের শ্রমিকরা মায়ের আরাধনায় সামিল হয়েছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দুর্গাপুজোর জন্য ৮৫ হাজার টাকা অনুদান মেলায় বন্ধ চা–বাগানের শ্রমিকরা অত্যন্ত খুশি। আর এই খুশি দেখা গিয়েছে চা–বাগানের শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের সন্তানদের মধ্যে। তাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন চা–শ্রমিকরা। এখন জেলার মোট ৯টি বন্ধ চা–বাগানের মধ্যে একটি মাদারিহাটে আছে। ঢেকলাপাড়া চা–বাগানের দুর্গাপুজো কমিটির সদস্য রবি কুমার বলেন, ‘দীর্ঘদিন চা–বাগান বন্ধ। আর তাই আমাদের জীবনযাপন খুব কষ্টের হয়ে পড়েছে। দুর্গাপুজো যে করব সেটার চাঁদা কে দেবে? রাজ্য সরকার অনুদান না দিলে এই বছর আমাদের পক্ষে চা–বাগানে দুর্গাপুজো করা সম্ভব ছিল না। তাই রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। রাজ্য সরকার দ্রুত বাগান খোলার ব্যবস্থা করবে বলে আশায় আছি।’
চা–বাগানগুলি খোলার বিষয়ে ইতিমধ্যেই শ্রম দফতরকে উদ্যোগ নিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো কাজ শুরু হবে দুর্গাপুজোর পর। দলের শ্রমিক সংগঠনও সক্রিয় রয়েছে তা খোলার জন্য। এখন দুর্গাপুজোর ছুটির জন্য কাজ বন্ধ আছে। দুর্গাপুজো মিটলেই শ্রমিকদের মুখে হাসি ফুটবে। খুলে যাবে বন্ধ চা–বাগান বলে সূত্রের খবর। কালচিনি চা–বাগান বন্ধ আছে। এখানের দুর্গাপুজো কমিটির সদস্য তথা শ্রমিক নেতা ওম লোহারের বক্তব্য, ‘জেলায় কয়েকটি চা–বাগান বন্ধ। শ্রমিকদের পক্ষে চাঁদা তুলে বাগানে দুর্গাপুজো করা অসম্ভব। রাজ্য সরকার অনুদান দেওয়ায় দুর্গাপুজোর আয়োজন হচ্ছে তোর্সা, দলসিং পাড়া–সহ বন্ধ চা–বাগানগুলিতে। এবার চা–বাগানগুলি খোলার অপেক্ষায় চা–শ্রমিকরা।’
এখন চা–বাগানগুলির মালিকের সঙ্গে কথা বলতে চান মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং তৃণমূল কংগ্রেসে শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে একটা মধ্যস্থতায় এসে বন্ধ চা–বাগানগুলি খুলে দিতে চান তাঁরা। তাহলে চা– শ্রমিকরা রোজগার করে খুশি থাকবেন। চা–বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বঁড়া ওড়াঁওয়ের কথায়, ‘চা–বাগান বন্ধ থাকলেও তার জন্য তো মায়ের পুজো বন্ধ থাকতে পারে না। আমাদের সরকার বন্ধ চা–বাগানে দুর্গাপুজো করার জন্য টাকা দিয়েছে। রাজ্য সরকার বন্ধ চা–বাগানগুলি খুলতেও তৎপর। আশা করছি দুর্গাপুজোর পরে চা–বাগানগুলি খুলবে।’