আর জি করের চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের CBI চার্জশিটে ‘সাক্ষী’ ৩৫ পুলিশ ও ১৯ চিকিৎসক
প্রতিদিন | ১৩ অক্টোবর ২০২৪
অর্ণব আইচ: আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআইয়ের সাক্ষীর তালিকায় রয়েছেন কলকাতা পুলিশের ৩৫ জন পুলিশকর্মী ও আধিকারিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন লালবাজারের এক পুলিশকর্তা তথা আইপিএস। গত সোমবার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। এই চার্জশিটে সাক্ষীর তালিকায় রয়েছেন ১৯ জন চিকিৎসকও। যদিও যে পাঁচজন ডাক্তারি পড়ুয়া ময়নাতদন্তে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের নাম নেই সাক্ষীর তালিকায়।
এছাড়াও ৩০ জন কেন্দ্রীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকও সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে চার্জশিটে দাবি সিবিআইয়ের। তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা মোট ১২৮। তাঁদের নামের তালিকা রয়েছে সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে। এই চার্জশিট পেশ হওয়ার আগে কলকাতা পুলিশের কর্মী ও আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার উপর গুরুত্ব দেয় সিবিআই। সেইমতো দুই আইপিএসকে সিবিআই তলব করে। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁদের সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদও করে। তাঁদের মধ্যেই এক পুলিশকর্তাকে মামলায় সাক্ষী করেছে সিবিআই।
মূলত টালা থানার কয়েকজন সাব ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবলের বয়ান নেয় সিবিআই। তাঁরা মূলত গত ৮ আগস্ট সকালে ডিউটিতে ছিলেন ও ঘটনাস্থলে যান। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের যে পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন ও ছবি তোলেন বা ভিডিওগ্রাফি করেন, তাঁদেরও সিবিআই আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ ছাড়াও আর জি কর হাসপাতালের ফাঁড়ির পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। কারণ, তাঁদের মধে্য কয়েকজন সঞ্জয় রাইকে আর জি কর হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেখেছিলেন। আবার কয়েকজন ঘটনার আগে সঞ্জয়ের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন।
এদিকে, চিকিৎসকদের মধ্যে যে চারজন নির্যাতিতার সহকর্মী হিসাবে রাতে তাঁর সঙ্গে ডিনার করেছিলেন, তাঁদের সিবিআই সাক্ষীর তালিকায় রেখেছে। এই চারজনের পলিগ্রাফ পরীক্ষাও করিয়েছিল সিবিআই। এ ছাড়াও নির্যাতিতার দেহের ময়নাতদন্তের দায়িত্বে যে তিন চিকিৎসক ছিলেন, তাঁদেরও সাক্ষী করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত ছিলেন পাঁচজন ডাক্তারি পড়ুয়া। তাঁরা ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়ায় ‘সন্তুষ্ট’ বলে নথিতে সইও করেন।
যদিও সিবিআই সাক্ষীর তালিকায় তাঁদের নাম রাখেনি। কলকাতা পুলিশের রিপোর্ট থেকে শুরু করে নথি, সিসিটিভির ফুটেজ, ডিএনএ, ফরেনসিক রিপোর্ট যাচাই করার জন্য সিবিআই দিল্লির এইমস ও দিল্লির মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি ‘মাল্টি ইনস্টিটিউশনাল মেডিক্যাল বোর্ড’ বা এমআইএমবি তৈরি করে। ওই বোর্ডের ১২ জনও সিবিআইয়ের সাক্ষী। এইমস, কেন্দ্রীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ-সহ মোট ৩০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।