‘যতক্ষণ পারি না খেয়ে থাকব’, জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে সাড়া, অরন্ধন পালন অভয়ার পরিবারের
প্রতিদিন | ১৪ অক্টোবর ২০২৪
অর্ণব দাস, বারাকপুর: প্রথমবার পুজোয় মেয়ে নেই কাছে। তাঁর নৃশংস পরিণতির সুবিচার যতদিন না হচ্ছে, ততদিন স্বস্তি নেই। প্রতি মুহূর্তে কাটে যন্ত্রণায়। ব্যক্তিগত শোক পিছনে সরিয়ে রেখে বিচারের দাবিতে আন্দোলনে শামিলও হয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের। শরীর এবং মন দুর্বল। কিন্তু তাতে কী? মেয়েকে হারানোর শোক তো মুছে যাওয়ার নয় কোনওভাবেই। তাই রবিবার, উমা বিদায়ের দিন যখন মেয়ের সহকর্মীরা অরন্ধনের ডাক দিয়েছেন, তখন সেই কর্মসূচিতেও সমানভাবে অংশ নিয়েছে অভয়ার পরিবার। এদিন অরন্ধন পালন করলেন তাঁরাও। অসুস্থ শরীর নিয়েও বাবা বললেন, ”ওরা বলেছিল, আমাদের অরন্ধন না করতে। আমাদের শরীর ভালো নেই খুব একটা। কিন্তু যতক্ষণ পারি, আমরা না খেয়ে থাকব।”
মেয়ের বিচারের দাবিতে গোটা দুর্গাপুজো তাঁদের কেটেছে বাড়ির সামনে ধরনা দিয়ে। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত ধরনা করেছেন অভয়ার মা, বাবা, কাকিমা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। দেবীপক্ষে এটাই এবছর তাঁদের উদযাপন। সেই ধরনায় কখনও কখনও রাজনৈতিক নেতাদেরও দেখা গিয়েছে। কখনও গিয়েছেন সেলিব্রিটিরা। তাতে পরিবারের এই প্রতিবাদ কর্মসূচির জোর বেড়েইছে। সকলের নজরে ছিল তাঁদের এই প্রতিবাদ। এই পরিস্থিতিতে রবিবার যখন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা একবেলা অরন্ধনের ডাক দিয়ে রাজ্যবাসীর কাছে তাঁদের কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান, তখন পিছিয়ে থাকেনি কন্যাহারা এই পরিবারও।
রবিবার অনশনরত চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়াতে অরন্ধন পালন করলেন নির্যাতিতার মা বাবা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এই প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, “আমরা অরন্ধন পালন করছি। চেষ্টা করছি উপোস করে থাকার। যতক্ষণ পারব, উপোস করে থাকব। একথা জুনিয়র ডাক্তারদেরও জানিয়েছি। ওঁরা বারণ করেছিল, তবুও ঠিক করেছি যতক্ষণ শরীর দেবে, করব।” বাবার কথায়, “অনশন করে তিনজন চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এটা আমাদের খুব দুঃখ দিয়েছে। চাই না আর কেউ অসুস্থ হোক। আমরা যেমন মেয়ে হারিয়ে যন্ত্রণায় আছি, যারা অনশন করছেন, তাদের পরিবারও কষ্টে রয়েছে।”
অভয়ার মায়ের বক্তব্য, “জুনিয়র চিকিৎসকরা এতদিন না খেয়ে আছেন, অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এনিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। চাইব প্রশাসন দ্রুত আলোচনা করে সুস্থ সমাধান করুক।” একইসঙ্গে এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে রোগীর পরিবারের উপর হামলা, মারধর করার প্রসঙ্গ তুলে মা-বাবার প্রতিক্রিয়া, ”এতে বোঝাই যাচ্ছে নিরাপত্তার যে অভাব ছিল, সেটা এখনও আছে।”