• দুয়ারে রেশন প্রকল্পে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ রাজ্যের
    বর্তমান | ১৪ অক্টোবর ২০২৪
  • কৌশিক ঘোষ, কলকাতা: দুয়ারে রেশন প্রকল্পে আরও নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিল খাদ্য দপ্তর। সম্প্রতি খাদ্যশ্রী ভবনে দপ্তরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করতে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ ও দপ্তরের প্রধান সচির পারভেজ আমেদ সিদ্দিকির উপস্থিতিতে শীর্ষ পর্যায়ের এক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই গোটা রাজ্যে বিধিবদ্ধ ও সংশোধিত রেশন এলাকার আধিকারিকদের এই সংক্রান্ত একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকের কার্যবিবরণীতে তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখও রয়েছে। খাদ্য দপ্তরের নির্ধারিত নিয়ম মেনে রেশন ডিলাররা প্রকল্পটি চালাচ্ছেন কিনা তার উপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, কয়েকটি গাফিলাতিও চিহ্নিত করেছে খাদ্য দপ্তর। ডিলারদের  এলাকায় ‘ক্লাস্টার’ তৈরি করে সেখানে গিয়ে রেশনের চাল-গম দেওয়ার কথা। অনেক সময় প্রয়োজনের থেকে বেশি ক্লাস্টার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই নির্দেশিকায়। আবার একটি ক্লাস্টার থেকে ২০০টির বেশি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিলে নভেম্বর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ডিলারের বিরুদ্ধে। দুয়ারে রেশনের নির্ধারিত দিনগুলির বাইরে খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। এমনকী ডিলাররা অনেক সময়, সূচি ছাড়াই দুয়ারে রেশন চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। নির্ধারিত দিনে ও সময়সূচি তৈরি করে যাতে দুয়ারে রেশন চালানো হয় তার নজরদারি রাখার জন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের  পরিকল্পনা প্রসূত দুয়ারে রেশন প্রকল্পটি ২০২০ সালের ডিসেম্বর নাগাদ  রাজ্যে চালু হয়।  কয়েকটি রাজ্য উৎসাহিত হয়ে এই ধরনের প্রকল্প পরে চালু করেছে। রেশন ডিলারদের সংগঠনগুলির ও ডিলারদের বড় অংশের এই প্রকল্পটি চালানোর ব্যাপারে প্রথমে আপত্তি ছিল। যদিও দুয়ারে রেশনের জন্য ডিলারদের প্রতি কুইন্টালে অতিরিক্ত ৯৫ টাকা করে কমিশন দেওয়া হয়। দুয়ারে রেশনে প্রকল্পের মাধ্যমে ডিলাররা গ্রাহকদের বাড়িতে তা কাছাকাছি এলাকায় গিয়ে খাদ্য সরবরাহ করছেন কিনা তার উপর খাদ্য দপ্তর অনলাইন প্রযুক্তির সাহায্যে নজরদারি চালায়। তার ভিত্তিতে অতিরিক্ত কমিশনের টাকা দেওয়া হয়। রেশন দোকান থেকে খাদ্য দিলে ডিলাররা শুধু কুইন্টলে ৭৫ টাকা করে সাধারণ কমিশন পান।


    তবে অতিরিক্ত কমিশন দিলেও প্রকল্পটি চালানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা আছে বলে দাবি করেছেন, অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। ঝড় বৃষ্টি বা পুজো সহ বিভিন্ন উৎসবের সময় বাইরে গিয়ে খাদ্য দিতে অসুবিধা হয়। যে অতিরিক্ত কমিশন দেওয়া তার থেকে খরচ বেশি পড়ে যায় অন্য জায়গার ব্যবস্থা ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য। এই পরিস্থিতে সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ডিলারদের কমিশন আরও বাড়িয়ে মাসে অন্তত ৫০ হাজার টাকা আয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি করেছে সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রী রেশন ডিলারদের মাসে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্ত এখনও ৫ হাজার টাকা বেশিরভাগ ডিলার পান বলে সংগঠনের অভিযোগ। তবে এই অতিরিক্ত টাকা দুয়ারে রেশন প্রকল্পতে অংশ নিলে দেওয়ার কথা।
  • Link to this news (বর্তমান)