সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়, বারাকপুর: লোকসভা ভোটের পর থেকে মাস ছয়েক শান্তই ছিল বারাকপুর শিল্পাঞ্চল। ‘গুণ্ডারাজ নয়, শান্তি চাই’ এটাই ছিল ভোটের স্লোগান। ভোটের পরে কোনও গোলমালই হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি ভাটপাড়া, জগদ্দল, নৈহাটি, টিটাগড় নতুন করে অশান্ত হতে চলেছে। মাঝে মধ্যেই বোমাবাজি, গোলমাল, শ্যুটআউটের ঘটনা ঘটছে। খুনের ঘটনাও ঘটেছে নৈহাটিতে। যার জেরে দুই ছাত্র নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। প্রাক্তন সাংসদের বাড়ির সামনে বোমাবাজি হয়েছে। চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য নূর-ই জামালকে খুনের সুপারি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুলিস প্রশাসনের। বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে ভাটপাড়া ও জগদ্দল এলাকার উপরে বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। অপরাধিদের উপরে সোর্স নেটওয়ার্ক বাড়াতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কোথাও কোনও গোলমালের খবর এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়া। গোলমালে জড়িত থাকলে দলমত নির্বিশেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে যারা বোমাবাজি ও মারামারিতে অতীতে যুক্ত ছিল, (হিস্ট্রি শিটার) তাদের থানা থেকে সতর্ক করতে বলা হয়েছে।
সেই সঙ্গে গোটা এলাকা জুড়ে ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাটপাড়া পুরসভা। বর্তমানে ১২০টি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। ৩০০ ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার জন্য দু’কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। তার মধ্যে সাংসদ পার্থ ভৌমিক ৮৪ লক্ষ টাকা দিচ্ছে, বাকি টাকা খরচ করবে ভাটপাড়া পুরসভা। তাহলে ৪২০টি ক্যামেরা লেগে যাবে গোটা ভাটপাড়া জুড়ে। সমস্ত স্পর্শকাতর এলাকায় ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্যামেরা লেগে গেলে অপরাধ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছেন পুলিস কর্তারা।
ভাটপড়ার মতো টিটাগড়ের উপর বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে দুই কাউন্সিলারের গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল হয়। গুলিবিদ্ধ হয় এক যুবক। ওই ঘটনার জেরে তৃণমূলের এক কাউন্সিলারকে থানায় ডেকে রীতিমতো ‘সমঝে’ দেওয়া হয়। আর যদি কোনও গোলমাল হয়, তা ফল ভোগ করতে হবে বলে পুলিস কর্তারা হুমকি দিয়েছেন। সব মিলিয়ে নতুন করে অশান্ত হচ্ছে বারাকপুর। উৎসবের মরশুম চলছে। গোলমাল যাতে চূড়ান্ত আকার না ধরে তার প্রতিটা থানাকে সতর্ক করেছেন বারাকপুর পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়া।