বীরভূমের কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৪ অক্টোবর ২০২৪
গত সপ্তাহে বীরভূমের কয়লাখনিতে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে ৭ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। আজ সোমবার মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বীরভূমের কয়লাখনিতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল চলতি মাসের ৭ অক্টোবর অর্থাৎ গত সপ্তাহের সোমবার। বীরভূমের খয়রাশোলের ওই কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের জেরে ৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় ওয়েস্টবেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্টের খোলামুখ কয়লা খনি চত্বরে এই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটেছিল। খনিতে বিস্ফোরণ ঘটনোর জন্য কয়লা খনিতে বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল। সেই বিস্ফোরক থেকেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। গঙ্গারামচক মাইনিং লিমিটেড নামে একটি সংস্থা এই কয়লাখনি চালিয়ে থাকে। ঘটনা পরেই সংস্থার অধিকারিকরা পালিয়ে যান। ট্রাক থেকে বিস্ফোরক নামানোর সময় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা অভিযোগ তোলেন, যে ওভারলোড লরি থেকে প্রশিক্ষণহীন শ্রমিকদের নিয়ে বিস্ফোরক নামানো হচ্ছিল। আর তাতেই এই বিপত্তি ঘটে। তাছাড়া আরও অভিযোগ, দুটি ট্রাকে করে বিস্ফোরক আনার কথা ছিল। কিন্তু, একটি ট্রাকে করে বিস্ফোরক আনা হয়েছিল তার ফলে ট্রাকটি ওভারলোড অবস্থায় ছিল। ঘটনায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় শ্রমিকদের দেহ। হাত-পা সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আলাদা আলাদা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। ট্রাকচালকের দেহ উদ্ধার হয় প্রায় ৭০ মিটার দূর থেকে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে যে বিস্ফোরণের তীব্রতা কতটা ছিল। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে সেই ঘটনায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। এদিকে, এই ঘটনার পরেই স্বজনহারা পরিবারদের ৩১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি চাকরি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
পরে ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। মামলাটি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। এদিন মামলার শুনানিতে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেক্ষেত্রে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার হয়েছিল তা জানাতে বলা হয়েছে। সম্ভব হলে ফরেন্সিকে রিপোর্টও জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যকে এই রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ওই দিন মামলার পরবর্তী শুনানি।