• ডাক্তারদের আন্দোলন দখল করছে সিপিএম? বিতর্ক তুঙ্গে
    এই সময় | ১৫ অক্টোবর ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্দোলনে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নিজেদের ঘোষণা অনুযায়ী সেই কর্মসূচিতে তারা দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছেন রাজনৈতিক দলগুলি থেকে। তবুও ধর্মতলায় চিকিৎসকদের অনশন মঞ্চের আশেপাশে সিপিএম তথা বাম মনোভাবাপন্ন চিকিৎসক, ছাত্র-যুব নেতৃত্ব, বামফ্রন্ট নেতাদের দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এমনকী, গত ১১ অক্টোবর বামফ্রন্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে ধর্মতলায় চিকিৎসকদের সমাবেশে নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের শামিল হওয়ার ডাকও দিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, সে দিনই সব থেকে বেশি মানুষের জমায়েত হয়েছিল সেখানে।গত ৯ অগস্ট আরজি করে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, কলতান দাশগুপ্তদের নেতৃত্বে নির্যাতিতার দেহ আটকানোর চেষ্টা থেকে ধর্মতলায় অনশন মঞ্চের আশেপাশে বাম মনোভাবাপন্নদের সক্রিয়তা দেখে প্রশ্ন উঠেছে, সিপিএম কি এই আন্দোলন হাইজ্যাক করতে চাইছে? দু’দিন আগে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দ-র কথায় সেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। সেই বক্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষও।

    কী বলেছিলেন কিঞ্জল? অবস্থান মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিকে বিশেষ কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের কর্মসূচি বলে যে প্রচার চালিয়েছে সেই প্রচেষ্টাকে আমরা তীব্র ধিক্কার জানাই।’

    কিঞ্জলের এই বক্তব্যের পরেই কুণাল ফেসবুকে লেখেন, ‘ওঁরা যা করছেন, ঠিক-ভুল আলাদা বিষয়, কিন্তু কর্মসূচি ওঁদের, সেটা হাইজ্যাকের চেষ্টা হচ্ছে, (উনি) আপত্তি তুলেছেন, ঠিক করেছেন।’ এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কিঞ্জল এবং কুণালের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বাম বাহিনী সরব হলেও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট আপাতত এই বিতর্ক এড়িয়ে যেতে চাইছে।

    সিপিএম প্রভাবিত অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরর্সের প্রাক্তন সম্পাদক মানস গুমটা সোমবার বলেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী শক্তি বিভাজন চাইছে। আমরা যেন সেই ফাঁদে পা না দিই।’

    উল্লেখ্য, গত রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার চিকিৎসকদের আন্দোলনে বিজেপি কর্মীদের বেশি সংখ্যায় যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সুকান্তরা মনে করছেন, বামেরা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে আন্দোলনকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে নকশালপন্থীদের উপস্থিতি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী আগেই সরব হয়েছেন। বাম মনোভাবাপন্নদের নিয়ে সতর্ক থাকতে প্রতিবাদী চিকিৎসকদের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

    যদিও সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে আন্দোলন চিকিৎসক সহ নাগরিক সমাজের আন্দোলন। তা হাইজ্যাক করার আমাদের কোনও আগ্রহ নেই।’

    নাগরিক সমাজের আন্দোলনে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা যে ঝান্ডা ছাড়া যোগ দিচ্ছেন তা অস্বীকার করেননি সুজন। এই প্রেক্ষাপটে অচলাবস্থা কাটাতে বিমান বসু সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। সদর্থক পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে বিমান চিঠিতে লিখেছেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবির এখনই সমাধান করতে হবে। ইচ্ছাকৃত ভাবে নির্বিকার থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া যাবে না।’ বিমানের এই চিঠি নিয়ে কুণাল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সংবেদনশীল ভাবে কাজ করছেন। বাম, উগ্রবাম, বিজেপি, কিছু বিক্ষিপ্ত শক্তি মিলে অরাজকতার চেষ্টা করছেন। জ্যোতি বসুর জমানায় লাঠিচার্জ হয়েছিল, এই জমানায় কেন লাঠিচার্জ হয়নি বিমান বসু এই তফাৎ বোঝার চেষ্টা করুন।’
  • Link to this news (এই সময়)