এই সময়: জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন আন্দোলনের মধ্যেই আজ, মঙ্গলবারের পুজো কার্নিভালের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছে রাজ্য প্রশাসন। রেড রোডের এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও রাজ্যের অনেক নেতা-মন্ত্রী, বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং বিদেশি অতিথিরা থাকবেন।এ দিকে অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সমর্থনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স-ও, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। জুনিয়র ডাক্তাররা অবশ্য পৃথক ভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। আর এ সবের মধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের কার্নিভাল বয়কট করে কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছেন। তার জেরে কার্নিভালে অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। ফলে কার্নিভাল ঘিরে রাখা হচ্ছে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা।
গত রবিবার চিকিৎসকদের ই-মেল করে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সে কথা বলতে গিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের গত ১১ অক্টোবরের একটি নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারা সম্মিলনীর পুজো মণ্ডপে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ন’জনকে অন্তর্বর্তী জামিন দিতে গিয়ে হাইকোর্ট বলেছিল, পুজোর কার্নিভালকে কোনও ভাবেই ‘ডিস্টার্ব’ করা যাবে না।
তার পরেও সংগঠকরা ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ কর্মসূচিতে অনড়। যদিও আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা এই কর্মসূচি থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন। তাঁরা পৃথক ভাবে মানবন্ধন কর্মসূচি করবেন। তাঁরা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, পুজোর কার্নিভালে তাঁদের কর্মসূচি কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। ফলে একই ইস্যুতে আন্দোলন করলেও জুনিয়র ডাক্তার এবং চিকিৎসক সংগঠনের পৃথক কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল চারটে থেকে রেড রোডে পুজো কার্নিভাল শুরু হবে। কার্নিভাল শেষে প্রতিমাগুলিকে নিরঞ্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হবে। সব মিলিয়ে মোট ৯১টি পুজো কমিটি কার্নিভালে অংশ নেবে। প্রায় ২৮ হাজার আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়েছে। জমিদার বাড়ির আদলে তৈরি হয়েছে মূল মঞ্চ। সেখানেই বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশিষ্ট অতিথিরা। মূল মঞ্চের উল্টো দিকে ভিভিআইপি মঞ্চ থাকলেও সেখানে এ বার কাউকে বসতে দেওয়া হবে না। ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্যানুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হবে কার্নিভাল।
রেড রোডের চার পাশে মোট ৫০০ জন পুলিশকর্মী থাকছেন। নিরাপত্তার তদারকি করবেন ১৬ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক এবং ৮ জন জয়েন্ট সিপি। সরকারি আমন্ত্রণপত্র ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার আগে প্রত্যেকের দেহ তল্লাশি করা হবে। রেড রোড ও লাগোয়া বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০০০ পুলিশ থাকবেন। বানানো হয়েছে চারটি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে ড্রোন ক্যামেরার নজরদারিও। বালির বস্তা দিয়ে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী বাঙ্কার।
কার্নিভালের জন্য বিশেষ বাসের ব্যবস্থা রাখছে প্রশাসন। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত স্পেশাল বাস চলবে। এ ছাড়াও গড়িয়া, যাদবপুর, এয়ারপোর্ট, বেহালা, ডানলপ, ঠাকুরপুকুর-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বাড়তি বাস রাখা হচ্ছে। রাত পর্যন্ত চালু থাকবে লঞ্চ পরিষেবা।