নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: জগদ্ধাত্রী পুজোর সৃষ্টিভূমি কৃষ্ণনগরে দুর্গাপুজোর প্রথম কার্নিভাল ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা দেখা গেল। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক পুজো কমিটি এই শোভাযাত্রা শামিল হয়। শোভাযাত্রায় নৃত্য, গীত সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বিদেশিদেরও কীর্তন গাইতে গাইতে কার্নিভালে শামিল হতে দেখা যায়। কার্নিভাল দেখতে শহরের রাজপথের দু’ ধারে জনতার ভিড় উপচে পড়ে। বিগত বছরগুলোতে নদীয়া জেলার দুর্গাপুজোর কার্নিভাল কল্যাণীতেই হতো। এবছরই প্রথম তা কৃষ্ণনগর শহরে করা হল। নদীয়া জেলার মোট ২২টি পুজো কমিটি এই কার্নিভালে অংশ নেয়। কোতোয়ালি থানার সামনে মূল মঞ্চ তৈরি হয়। তার সামনে পুজো কমিটিগুলো নাচ, গান, আবৃত্তির পরিবেশন করে। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে পুজো কমিটিগুলি জড়ো হয়। তারপর সদরের মোড়, নেদেরপাড়া, এভি স্কুল মোড় হয়ে কদমতলা ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জেলা প্রশাসনের আধিকারিক সহ, জনপ্রতিনিধিরা কার্নিভালে উপস্থিত ছিলেন।
নদীয়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, কৃষ্ণনগর শহরে কার্নিভালে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুজো কমিটিগুলি অংশগ্রহণ করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন বাদ্য, কীর্তন সহযোগে বহু মানুষ কার্নিভালে শামিল হন।
কৃষ্ণনগর শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোই মূল উৎসব। তুলনায় দুর্গাপুজোর জৌলুস কম। তাই এই ঐতিহ্যশালী শহরে দুর্গাপুজোর জৌলুসকে বাড়িয়ে তুলতে জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ। দুর্গাপুজোর বিসর্জনের কার্নিভালের জন্য বেছে নেওয়া হয় কৃষ্ণনগর শহরকেই। কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী ২২টি পুজো কমিটির মধ্যে ১৩টি পুজো কমিটি ছিল কোতোয়ালি থানার। রানাঘাট ও তাহেরপুর থানার দু’টি করে পুজো কমিটি এবং চাপড়া, গাংনাপুর, শান্তিপুর, নাকাশিপাড়া ও নবদ্বীপের একটি করে পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোতোয়ালি থানার ঘূর্ণি তরুণ সংঘ, যাত্রাপুর আঞ্চলিক বারোয়ারি, আমিনবাজার বারোয়ারি, নতুনপল্লি বারোয়ারি, বউবাজার অরবিন্দ নারী শক্তি, কালীপুর রবীন্দ্রপল্লি বারোয়ারি, পাত্র বাজার বারোয়ারি, কুর্চিপোতা বারোয়ারি কার্নিভালে অংশ নেয়। এছাড়াও চাপড়ার দইয়ের বাজার মাঠপাড়া সর্বজনীন বারোয়ারি, রানাঘাট থানার গুড়পাড়া মিলন সংঘ, দয়াল নগর একতা সংঘ, তাহেরপুর থানার অনামী ক্লাব, ভাতৃশ্রী সংঘ, নাকাশিপাড়া ধর্মদা যুবক সংঘ, নবদ্বীপ থানার মহিলা পরিচালিত সর্বজনীন শ্রীশ্রী দুর্গোৎসব কমিটি কার্নিভালের শোভা বৃদ্ধি করে।
গঙ্গাবাস বারোয়ারির উদ্যোক্তা অসিত বিশ্বাস বলেন, গ্রামের লোকজন আমাদের এই শোভাযাত্রায় এসেছিলেন। সেই সঙ্গে বিদেশিরাও আমাদেরই শোভাযাত্রায় ছিলেন। তাঁরা কীর্তন করছিলেন শোভাযাত্রার সঙ্গে। আবার এসো মা...। কৃষ্ণনগরে।