সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত দূষণমুক্ত বিসর্জন হয় নবদ্বীপের ভাগীরথীতে। পুজোতে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিল নবদ্বীপ পুরসভা। তিনদিনই ঘাটগুলিতে নজরদারি ছিল পুলিস প্রশাসনের। বিসর্জন ঘাটে পুজোয় ব্যবহৃত ফুল বেলপাতা, কলাগাছ সহ বিভিন্ন উপকরণ ফেলার জন্য রাখা হয়েছিল পুরসভার দুটি বড় ট্রলার। সেখানেই বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা পুজোর উপকরণগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলেন। এছাড়াও পুরসভার পক্ষ থেকে বারবার মাইকে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখতে প্রচার চালানো হচ্ছিল। ঘোষণা করা হচ্ছিল, ‘শ্রীচৈতন্যদেবের পুণ্যভূমি এই পবিত্র গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখুন। গঙ্গাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সকলের।’
শনিবার সকাল থেকেই দু’-একটি বারোয়ারি এবং বেশকিছু বাড়ির প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। রবিবারও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরসভার বিভিন্ন এলাকার প্রতিমা ভাগীরথীর বিভিন্ন ঘাটগুলিতে নিরঞ্জন করা হয়। সোমবার রাত পর্যন্ত চলে প্রতিমা নিরঞ্জন।
স্থানীয় ফাঁসিতলাঘাট, শ্রীবাস অঙ্গন ঘাট, দেয়ারাপাড়া ঘাট, মণিপুর ঘাট, প্রাচীন মায়াপুর জলপ্রকল্প ঘাট সহ বিভিন্ন ঘাটগুলিতে বিসর্জন দেখতে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য মানুষ। তবে এই ক’দিনে প্রথা মেনে, শোভাযাত্রা সহকারে কেউ কাঁধে করে, কেউ ট্রাকে করে, কেউ বা লোহার বল বেয়ারিং লাগানো গাড়ি করে প্রতিমা নিয়ে যান। বিসর্জনকে কেন্দ্র করে ফাঁসিতলা ঘাট রীতিমতো মেলার চেহারা নেয়। পুরসভার স্থায়ী সহায়তা শিবির থেকে বারবার বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়। নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে নিরঞ্জনের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পুরসভার পক্ষ থেকে ক্রেন দিয়ে প্রতিমার কাঠামো তুলে ফেলা হয়। বিসর্জনের সময়গুলিতে জলপথেও ছিল বিশেষ নজরদারি।
নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, শনিবার থেকে দু’-একটা বারোয়ারি সহ বাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে ফাঁসিতলা ঘাট, শ্রীবাস অঙ্গন ঘাট, মণিপুর ঘাট,দেয়ারা পাড়া ঘাট এবং রানির ঘাটে। সবগুলি ঘাটেই প্রতিমা নিরঞ্জন করা হলেও ফাঁসিতলা বিসর্জন ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের সব রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। অন্যান্য বিসর্জন ঘাটে পুজোয় ব্যবহৃত ফুল বেলপাতা, কলাগাছ সহ বিভিন্ন উপকরণ ফেলার জন্য নিদিষ্ট ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, নবদ্বীপ থানার পুর ও গ্রামীণ এলাকায় মিলিয়ে মোট ৩০৫টি দুর্গা পুজো হয়েছিল। এর মধ্যে শনিবার ও রবিবার এই দু’দিনে বিভিন্ন ঘাটে ২১১টি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। বাকি প্রতিমাগুলি সোমবার রাতের মধ্যে নিরঞ্জন হয়ে যাবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।