• তিন জেলায় কার্নিভাল ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা 
    বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম: আলপনা আঁকা রাজপথে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় মাধ্যমে কার্নিভাল উৎসবে মাতল দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্তারা, বিশিষ্টদের পাশাপাশি উৎসবে শামিল হন প্রচুর দর্শনার্থী। বিকেল থেকেই কার্নিভাল রুটের দু’ধারে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। তমলুক থেকে মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম সব জায়গায় একই ছবি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্নিভালকে কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলায় জেলায় পৌঁছে দিয়েছেন। পুজো শেষে মা কৈলাসে ফিরে যাচ্ছেন। সকলের মন ভারাক্রান্ত। আবারও এক বছরের অপেক্ষা। তারমধ্যে এই কার্নিভালকে ঘিরে ছিল বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা। জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজ এবং স্থানীয় বিভিন্ন চ্যানেলে কার্নিভালের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড় থেকে নিমতলা পর্যন্ত কার্নিভাল রুট করা হয়। কয়েকদিন ধরেই এই রাস্তা আলপনায় সাজিয়ে তোলা হয়। পুরাতন জেলাশাসক অফিসের সামনে কার্নিভালের মূল অনুষ্ঠান মঞ্চ গড়া হয়। সেখানে মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী, পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য, তমলুক, নন্দকুমার, মহিষাদল, রামনগর, এগরার বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। মোট ১৯টি পুজো কমিটি কার্নিভালে অংশ নেয়। হাতে বরণডালা, সাঁওতালি নৃত্য, জীবন্ত দুর্গা থিম সহ সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানায় বিসর্জনের এই শোভাযাত্রা আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। জলের অপচয় রোধ, বিশ্ব উষ্ণায়ন, বাল্যবিবাহ বন্ধ সহ নানা বিষয় কার্নিভালে বার্তা হিসেবে পুজো কমিটিগুলি তুলে ধরে। তমলুকের আদি তাম্রলিপ্ত সর্বজনীন দুর্গোৎসব, আমরা সবাই ক্লাব, তাম্রলিপ্ত নারী প্রগতি, নন্দকুমারের এনএসসিসি, খঞ্চি মিলনবীথি, হলদিয়ার বাসুদেবপুর ক্ষুদিরাম স্মৃতি সঙ্ঘ, পাঁশকুড়ার মধুসূদনবাড় সংগ্রামী সাথী সহ মোট ১৯টি পুজো কমিটি অংশ নেয়। 


    কার্নিভাল অনুষ্ঠান ঘিরে পশ্চিম মেদিনীপুরে উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। শহরের বটতলা চক এলাকায় কার্নিভালের মূল মঞ্চ করা হয়েছিল। সেখানে সেচ ও জলসম্পদ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, সাংসদ জুন মালিয়া, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী, পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। মেদিনীপুর শহরের বটতলাচক থেকে গোলকুঁয়াচক পর্যন্ত কার্নিভালের রুট ছিল। মোট ১৫টি পুজো কমিটি তাতে অংশ নেয়। বিসর্জনের এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দেখার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। কার্নিভালে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন পুজো কমিটি সম্প্রীতি সহ নানা বিষয়কে শোভাযাত্রায় তুলে ধরে। 


    মানসবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গোৎসবকে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তজার্তিক পরিসরে নিয়ে গিয়েছেন। জেলায় জেলায় তাঁর উদ্যোগে কার্নিভাল হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের উন্মাদনায় আমরা আপ্লুত। কার্নিভাল ঘিরে মাতল ঝাড়গ্ৰামও। ছৌ, ধামসা মাদল আর ঢাকের তালে কার্নিভাল অনন্য হয়ে ওঠে। শহরের গৌড়ীয় মঠ চত্বরে মেন রোডের সামনে থেকে পাঁচ মাথার মোড় পর্যন্ত কার্নিভাল চলে। মোট সাতটি পুজো কমিটি তাতে অংশ নেয়। পাঁচমাথার মোড়ে মূল মঞ্চে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারাণ্ডি, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল, মহকুমা শাসক শুভ্রজিৎ গুপ্ত সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ঘোড়াধরা, বাছুরডোবা, মাঝেরপাড়া প্রভৃতি পুজো কমিটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিয়ে এগিয়ে যায়। এই কার্নিভাল দেখতে রাস্তার দু’ধারে ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। মূল মঞ্চের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।  মেদিনীপুরে পুজো কার্নিভাল।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)