চাঁদা তুলে কেনা ফুটবল কার কাছে থাকবে তা নিয়ে বচসা, বন্ধুর ঘুষিতে যুবকের মৃত্যু
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, ডোমকল: চাঁদা তুলে ফুটবল কিনেছিল একদল বন্ধু। খেলার পর সেই বল কার বাড়িতে থাকবে, তা নিয়ে বচসা বাধে। দুই বন্ধুর মতবিরোধে বচসা চরমে পৌঁছয়। চলে হাতাহাতিও। হাতাহাতির সময় রেগে গিয়ে বন্ধুকে ঘুষি মেরেছিল আর এক বন্ধু। তাতেই ইমন শেখ (২০) নামে এক বন্ধুর মৃত্যু হল। ঘটনার জেরে রবিবার দুপুরে ইসলামপুরের হুড়শি পঞ্চায়েতের আরিজপুরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিস। মৃতের পরিবারের তরফে অভিযুক্ত রাজেশ শেখ ও তার পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে রানিনগর থানার পুলিস।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আরিজপুরের একদল যুবক চাঁদা তুলে একটি ফুটবল কিনেছিল। রবিবার দুপুরে পাড়ার বাগানে বন্ধুরা মিলে ওই ফুটবলটি নিয়ে খেলছিলেন। খেলা শেষে ওই ফুটবল কার বাড়িতে রাখা হবে, তা নিয়ে শুরু হয় বচসা। অন্যরা তেমন আপত্তি না জানালেও বেঁকে বসে ইমন ও রাজেশ। দু’জনেই বলটি নিজেদের কাছে রাখার জন্য তর্কাতর্কি শুরু করে। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে পৌঁছয়। এর মাঝেই ইমন রাজেশকে ধাক্কা দেয় বলে অভিযোগ। পাল্টা রাজেশ ধাক্কা দিতেই অশান্তি চরম আকার নেয়। হাতাহাতির মাঝেই রাজেশ ইমনকে ঘুষি মারে বলে অভিযোগ। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইমন। তারপরও তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ইমনের পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে রানিনগরের গোধনপাড়া ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিস। ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপন করেছে অভিযুক্ত রাজেশ শেখ। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ইসলামপুর থানার পুলিস। শুধু বল নিয়ে অশান্তির কারণেই এই ঘটনা নাকি এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অন্য কারণ, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।
মৃতের মা ফুলসুরা বিবি বলেন, ওরা সবাই ভালো বন্ধু। আমার ছেলের সঙ্গে একসঙ্গেই ওঠাবসা। পুরনো কোনও ঝামেলা ছিল না। ওরা খেলতে গিয়েছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজেশ আমার ছেলেকে মেরেছে। আমি ওর শাস্তি চাই। মৃতের বাবা জালিমুদ্দিন শেখ বলেন, আমার ছেলেকে রাজেশ ও তার ভাই মিলে ব্যাপক মারধর করেছে। এমনকী সেখানে রাজেশের বাবা উপস্থিত ছিল। তারপরও তিনি বারণ করেননি। ঘটনার সময় আমি পাশের গ্রামে ছিলাম। কী কারণে ছেলেকে মেরেছে তা জানি না।
এক পুলিস অফিসার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে যা উঠে আসছে তাতে ফুটবল রাখা নিয়ে বচসার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।