সংবাদদাতা, মানিকচক: মালদহ জেলার গোপালপুরের কামালতিপুর গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্নের পথে। গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবারের জমি-জায়গা। সকলে উদ্বাস্তু হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের আম বাগানে। সোমবার এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে একহাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধের কাজের দাবি তুলেছেন দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ ঈশা খান চৌধুরী। ভাঙন রুখতে প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও দেরিতে কাজ শুরুর অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। এমনকী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে দড়ি টানাটানির জেরে মানিকচকজুড়ে এই ভাঙন চলছে বলে অভিযোগ দুর্গতদের।
মানিকচকের গোপালপুর পঞ্চায়েতের কামালতিপুর গ্রামে প্রথমে বন্যা পরিস্থিতির জেরে ত্রাণ শিবিরে দিন কাটিয়েছেন বাসিন্দারা। সেই দুর্যোগ কাটিয়ে বাড়ি ফিরতেই আরেক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা। গঙ্গার জলস্তর কমতেই কামালতিপুরে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। বাসিন্দাদের দাবি, গত তিন দিনের গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে পুরো কামালতিপুর গ্রাম। প্রায় ৫০০ পরিবারের জমি, বাড়ির জায়গা গ্রাস করেছে গঙ্গা।
এই পরিস্থিতিতে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বধূ হাসনারা বিবি বলেন, আতঙ্কে বাড়িঘর ভেঙে ফাঁকা আম বাগানে জিনিসপত্র রেখেছি। সেখানেই খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাতে হচ্ছে আমাদের। কোথায় যাব? কী করব? বুঝতে পারছি না। দ্রুত প্রশাসন পদক্ষেপ করুক, চাইছেন বাড়িহারারা
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সেচদপ্তর অবশ্য গঙ্গা ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে।
বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকায় চলছে কাজ। তবে অস্থায়ী এই বাঁধের কাজ নিয়েও বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। মহম্মদ নাসিরউদ্দিন বলেন, বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ সম্ভব নয়। পাথরের মাধম্যে স্থায়ী কাজ করতে হবে। এই কাজে শুধু ঠিকাদারি সংস্থার লাভ হবে। নদীপাড়ের মানুষের কোনও কাজে লাগবে না।
এদিন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন সাংসদ ঈশা খান চৌধুরী। তিনি বলেন,ভাঙন রোধে পোক্ত কাজ করার জন্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। একবারে না হলেও ধাপে ধাপে সেই টাকা দিতে হবে। মালদহের এই সমস্যা নিরসনে কেন্দ্র ও রাজ্য উদাসীন। আমরা তাদের ঘুম ভাঙাবো। সংসদে আমি এই সমস্যা তুলে ধরব।
যদিও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ইতিমধ্যে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হয়েছে। পরে নদীর জল কমলে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্থায়ীভাবে কাজ হবে।
কংগ্রেস সাংসদকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। সাবিত্রীর কথায়, যাঁরা ভাঙন পরিদর্শন করছেন আর রাজ্য সরকারকে বদনাম করছেন, তাঁদের কোনও কাজ নেই। তাই এই সব উল্টোপাল্টা বলছেন। নিজস্ব চিত্র।