নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কর্মসূত্রে ছিলেন চেন্নাইয়ে। সেখানে বসে জানতে পারেন পুজো মিটতেই বি টেক-এ ভর্তি। কিন্তু এজন্য জলপাইগুড়ির রানিনগরের বাসিন্দা ঋতার্থ মোদকের দরকার ছিল ডমিসাইল সার্টিফিকেট। কীভাবে মিলবে শংসাপত্র? পুজোয় সরকারি অফিস ছুটি। উপায় না পেয়ে ই-মেল করেন জলপাইগুড়ি সদরের মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তীকে। মেল পেয়েই উদ্যোগী হন এসডিও। ছুটির মধ্যেই কর্মীদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে অফিস খুলিয়ে তৈরি করা হয় যুবকের শংসাপত্র। প্রশাসনের ভূমিকায় খুশি ঋতার্থ। কোচবিহার গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তাঁর আশা, আপগ্রেডেশনের ভিত্তিতে হয়তো জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও পড়ার সুযোগ পাবেন তিনি।
এদিকে, ঋতার্থকে সাহায্য করতে পেরে খুশি প্রশাসনের আধিকারিকরাও। সদরের এসডিও বলেন, শৌভিক মজুমদার, প্রবীর রায়ের মতো আমার অফিসের কর্মীদের জন্য আমি গর্বিত। কারণ একবার বলতেই তাঁরা ছুটির মধ্যে অফিসে এসে ওই যুবকের প্রয়োজনীয় শংসাপত্র তৈরি করে দিয়েছেন।
ঋতার্থ বলেন, ডিপ্লোমা পাশ করার পর ক্যাম্পাসিংয়ে চাকরি পেয়ে চেন্নাইয়ে চলে যাই। বি টেক পড়ব বলে এন্ট্রাসও দিই। সেখানে ভালোই র্যাঙ্ক হয়। ২ অক্টোবর পোর্টাল খুলে জানতে পারি, ৩ তারিখ কাউন্সেলিং। ১৩-১৫ তারিখ ভর্তি। অনলাইনে কাউন্সেলিংয়ে যোগ দিয়েই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করি। পুজোর সময় ট্রেনের টিকিট ছিল না। তৎকাল টিকিট কাটি ট্রেনের। বাড়ির লোকজনকে বলি, ডমিসাইল সার্টিফিকেট লাগবে ভর্তির জন্য। কিন্তু ওই শংসাপত্র পেতে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দরকার। কীভাবে পুজোর মধ্যে এসব জোগাড় হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে। কোনওমতে বাড়ির লোকজন রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট জোগাড় করে। এবার দরকার ডমিসাইল সার্টিফিকেট। ৬ তারিখ বাড়িতে পৌঁছেই বিডিও অফিসে যাই। দেখি অফিস বন্ধ। এসডিও অফিসও বন্ধ ছিল। কোনও পথ খুঁজে না পেয়ে ৭ তারিখ দুপুরে এসডিও’কে ই-মেল করি। কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তর আসে। এসডিও অফিস থেকে ফোন করে কী কী নথিপত্র আনতে হবে, বলে দেওয়া হয়। সেইমতো সবটা জোগাড় করে আমি সপ্তমীর দিন, ১০ তারিখ এসডিও অফিসে আসি। ছুটির মধ্যেও অফিস খুলে আমার সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দেন মহকুমা শাসক। প্রশাসনের এই উদ্যোগে আমি দারুণ খুশি।
সম্প্রতি ছুটির দিনে অফিস খুলে এক ছাত্রীর ওবিসি সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দেয় জলপাইগুড়ি সদরের মহকুমা প্রশাসন। শংসাপত্রের অভাবে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা ওই ছাত্রীর স্নাতকোত্তরে ভর্তির সুযোগ হাতছাড়া হতে বসেছিল। তিনিও উপায় না পেয়ে রাত প্রায় ১২টা নাগাদ ই-মেল করেছিলেন এসডিও’কে। মেল পেয়েই ওই ছাত্রী যাতে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র পান, সেব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছিলেন এসডিও। নিজস্ব চিত্র।