সংবাদদাতা, কল্যাণী: বছরখানেক আগে নতুন গাড়ি কিনেছেন কল্যাণীর এ-৯ সাব ব্লকের এক বাসিন্দা। গাড়িটি রাখা ছিল তাঁর বাড়ির পাঁচিল সংলগ্ন রাস্তার পাশে। মহাষ্টমীর রাতে সেই গাড়ির বনেটে পেরেক জাতীয় কিছু দিয়ে কেউ বা কারা আঁকিবুঁকি করে গিয়েছে। তাঁর বাড়ির গেটের সামনে ফেলে রেখে গিয়েছে বাক্স সমেত আধখাওয়া বিরিয়ানি। পুজোর ক’দিন রাতের শহরে ‘তাণ্ডব’-এর চিহ্ন রয়েছে আরও। যেমন, বি ব্লকের একটি বাড়ির কাচ ভাঙা হয়েছে ঢিল ছুড়ে। ফুলের গাছ নষ্ট করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি বাড়ির পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে মলত্যাগ করে গিয়েছে কেউ। বহু বাড়ির সামনে দর্শনার্থীরা প্রস্রাব পর্যন্ত করেছেন। খাবারের প্যাকেট, জলের ফাঁকা বোতলের ছড়াছড়ি তো আছেই। উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলা হয়েছে যত্রতত্র। সব মিলিয়ে সাজানো-গোছানো, নিরিবিলি শহর কল্যাণীর প্রধান রাস্তাগুলি পুজো পরবর্তী সময়ে নোংরা-আবর্জনায় ভরে উঠেছে। এই অবস্থার জন্য শহরের বাসিন্দারা বাইরে থেকে আসা কিছু অসচেতন দর্শনার্থীকে দায়ী করেছেন। কল্যাণী শহরের তিনটি বড় পুজো দেখতে এবারও কাতারে কাতারে মানুষ এসেছিলেন। তাঁদেরই একাংশের ‘তাণ্ডবে’ নাজেহাল অবস্থা শহরবাসীর। এনিয়ে তাঁরা ক্রমাগত ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সামাজিক মাধ্যমে।
শুধু রাস্তা বা বাড়ির চত্বর নয়, পুজোর মাঠগুলিও আবর্জনায় ভরে উঠেছে। পুরসভার তরফে ইতিমধ্যে রাস্তাগুলিতে সাফাই অভিযান চললেও তাতে খুব একটা সুরাহা হয়নি বলেই দাবি ভুক্তভোগীদের। রেললাইনের ধারেও প্রচুর মানুষ ‘প্রকৃতির ডাকে’ সাড়া দিয়েছেন এই ক’দিনে। তবে বাইরে থেকে আসা দর্শকদের অনেকেই বলছেন, পর্যাপ্ত শৌচালয় নেই। অথচ পুজোর সময় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেছে। তাছাড়া, যেখানে সেখানে ‘নো এন্ট্রি’ করে দেওয়ায় রাস্তা পার করে সুলভ শৌচালয়ে পৌঁছতেও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এসব কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে বড় পুজোর উদ্যোক্তাদের দাবি, পুজো প্রাঙ্গণের আশপাশে পর্যাপ্ত শৌচালয়ের ব্যবস্থা ছিল। শহরের এক ভুক্তভোগী বাসিন্দার কথায়, ‘মানুষের ভিড় সহ্য করা যায়। কিন্তু এমন নোংরামো অসহ্য।’ পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার শহরের সব প্রতিমা বিসর্জন হয়ে যাবে। তারপর শহর সাফাইয়ের কাজে নামা হবে।